নিজস্ব প্রতিবেদক: কুর্মিটোলা হাসপাতাল বা অন্যান্য ‘করোনা’ চিকিৎসা কেন্দ্রে চিকিৎসার যে বাস্তবতা-তা রীতিমত ভীতিকর। এখান থেকে যারা কোনভাবে সুস্থ্ হয়ে ফিরেছেন বা যারা ভুক্তভোগী- তাদের অভিজ্ঞতা শুনলে গা শিউরে উঠবে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম সহ বিভিন্ন গনমাধ্যমে সংশ্লিষ্টদের নির্মম অভিজ্ঞতার কথা শুনে অনেকেই ভয়ে জড়সড় হয়ে পড়ছেন। তাই উপসর্গ দেখা দিলে বেশির ভাগ মানুষই টেস্ট আর হাসপাতালের কথা ভাবছেন না। তারা গোপন রাখছেন এবং ঘরেই থাকছেন। না থেকে উপায় কি ? সেজন্য কত মানুষ যে করোনায় আক্রান্ত আর কত মানুষ যে প্রতিদিন মারা যাচ্ছে- আমরা তার কোন সঠিক খবর পাচ্ছি না। আজকে যে একজন সিনিয়র সাংবাদিক ও একজন পুলিশ মারা গেলো- প্রিভিলেইজড পিপল হয়েও তারা কিন্তু চিকিৎসার জন্য যান নাই। এর বাস্তব কারন হলো আস্থার সংকট। আমার ধারণা ৯০ ভাগ মানুষই আর তাদের এই চিকিৎসার উপর নির্ভর করেন না। তার চাইতে নিজের বাড়িতে ঘরের মধ্যে পরে মরে থাকাকেই তারা শ্রেয় মনে করছে। একদিকে সরকার ডক্টরদের অভিযুক্ত করছে, ধমকাচ্ছে, প্রনোদনা দিচ্ছে- আবার ডক্টররাও সরকারকে অভিযুক্ত করছে। অন্যদিকে আবার ডক্টর, নার্সরাও পরস্পরের বিরুদ্ধে আঙ্গুল তুলছে। নার্সরা বলছেন ডক্টসররা প্রটেকশন নিয়ে বসে থাকবেন, আমরা কেন রুগীর কাছে যাবো। সেজন্য দুর থেকে কোনভাবে একবার ঔষুধ নিক্ষেপ করেই তাদের দায়িত্ব শেষ। এ এক আজব দেশ, আজব ব্যাপার। মাঝখানে থেকে ভুক্তভোগী মানুষ হলো চিরেচ্যাপ্টা ও নির্মমতার শিকার। আর সরকারের লোকদের মুখে কত কথা, কত বাগাড়ম্বর যে শুনলাম-তার কোন হিসাব নেই। অবশ্য তাদের মুখে কখনই লাগাম ছিলো না। কিন্তু ফলাফল বরাবরই অশ্বডিম্ব। এক একটা সার্কাসের ক্লাউনের মতই।
এদেশে স্বাস্থ্য মন্ত্রী একজন আছেন বটে ! বাট তার ভাষা আমরা বুঝি না, আমাদের ভাষাও তিনি বুঝেন না ! তার পরেও উজিরে খামাখা হিসাবে তাকেই রাখা হবে, কারন- ব্যর্থতার দায়ভার নেবার এবং মানুষের গালাগালি খাবার জন্য মাঝখানে একটা লোক তো লাগে। গোবেচারা মন্ত্রী মশায় না হয় নন্দ ঘোষ হিসাবেই থাক। মানে এই মন্ত্রী ব্যর্থ আর সবাই হলো সফল। অবশ্য লুন্ঠন আর জোচ্চুরি করে এদেশের স্বাস্থ্য ব্যবস্থার বারোটা তো আগেই বাজানো হয়েছে। আমাদের দেশের স্বাস্থ্য ব্যবস্থার মত এমন রুগ্ন ও জরাজীর্ণ অবস্থা পৃথিবীর কোথাও আছে কিনা আমার জানা নাই। শুধু লুন্ঠন নয়,পরিকল্পিত ভাবেই ভারতমুখী চিকিৎসার উপর নির্ভর করে রাখাও আরেকটা কারন। অবশ্য দুর্বৃত্ত আর লুটেরাদের তো দেশে চিকিৎসা করাবার দরকার হয় না।
বাট, এখন তারা পড়েছেন বিপদে,ভয়ও পাচ্ছেন -কারন ‘করোনা’ রোগ তো আর ভিআইপির তোয়াক্কা করে না এবং চিকিৎসার জন্য এখন বিদেশে যাবারও সুযোগ নাই।
তাই এখন তারা হন্যে হয়ে আজরাইল মুক্ত ভিআইপি হাসপাতাল বানাচ্ছেন ! কিন্তু উপরে যিনি আছেন, তিনি যে মহা পরিকল্পনাকারী। আর ডক্টরদের বিরুদ্ধে কিছুই বলবার নাই আমার। বললে অনেকেই মনে খারাপ করবে। শুধু বলি- এতসব মন্ত্রী, মন্ত্রনালয়, হাসপাতাল, ডক্টর, মেডিক্যাল কলেজ, এই হতভাগ্য মানুষের দেশে আর দরকার নাই। অনেক হয়েছে, তার চাইতে বরং সবগুলোকে ভেঙে চুরে, সেখানে কুমির বা বিষধর সাপের চাষ করলে-অনেক লাভ। অন্তত বেঁচে থাকা মানুষগুলোকে- এদের জন্য আর ঘানি টানতে হবে না।।
শহিদুল ইসলাম বাবুল, লেখক ও রাজনিতিক।
 
	    	 
                                

