২০২১ সালের রিপোর্ট অনুযায়ী গণমাধ্যমের স্বাধীনতার ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ১৮০টি দেশের মধ্যে ১৫২তম হয়েছে। ২০২০ সালে ১৫১তম ছিল, এর আগের বছর ১৫০তম। আওয়ামীলীগের উন্নয়নের আরো একটি বড় মাইলফলক হিসাবে এটিরও প্রচার হওয়া উচিত।
সম্পুরক তথ্য হিসাবে উল্লেখ করা যায় যে ২০১৩ সাল থেকে আওয়ামীলীগের আমলে ১৪৬ থেকে ক্রমান্বয়ে ২০২১ সালে ১৫২তে নেমেছে প্রেস ফ্রিডম ইনডেক্সে।
এর চেয়েও খারাপ তথ্য হচ্ছে যে বাংলাদেশের অবস্থান ভারত, পাকিস্তান, এমনকি আফগানিস্তানেরও নিচে। রাশিয়ার অবস্থান ১৫০, দারিদ্র্যে জর্জরিত ভেনেজুয়েলা বাংলাদেশের চেয়ে ভালো অবস্থানে আছে।
একটু ভেবে দেখুন পাঠক, ভারতের চেয়ে খারাপ! মানে ভারতীয় গোদি মিডিয়া যারা সারাদিন বসে মোদির গুণকীর্তন করে, বিজেপির পূজা ছাড়া যাদের দিন শুরু হয় না আর রাত শেষ হয় না- সে ভারতের চেয়ে বাংলাদেশের অবস্থা খারাপ। গৌরি লংকেশের মত সাংবাদিক যে দেশে নিহত হন সে দেশের চেয়েও খারাপ!
পাকিস্তানের চেয়েও খারাপ! মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তি আওয়ামীলীগের আমলে চিরশত্রু পাকিস্তানের চেয়ে খারাপ অবস্থায়! “আমরা পাকিস্তান হতে চাই না” এর দল পাকিস্তানের চেয়ে খারাপ অবস্থায় আছে, ব্যাপারটাকে সাহিত্যরস-মণ্ডিত!
আফগানিস্তানের চেয়েও খারাপ! আফগানিস্তান!! যুদ্ধবিধ্বস্ত আফগানিস্তানের চেয়েও আমাদের গণমাধ্যম বেশি পরাধীন!
রিপোর্টার্স উইথাউট বর্ডারের মতে করোনাকালে বাংলাদেশে গণমাধ্যমের স্বাধীনতা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। মহামারীর সময়ে তথ্যের উন্মুক্তদ্বার হওয়া মহামারী নিয়ন্ত্রণে নিয়ামক হিসাবে কাজ করে। সর্বোচ্চ স্বাধীনতার দেশের দিকে তাকালেই বুঝতে পারবেন আপনারা, নরওয়ে, ফিনল্যান্ড, সুইডেন, নিউজিল্যান্ড, এরা সবাই গণমাধ্যমের স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে পেরেছে বলেই বৈশ্বিক মহামারীর মধ্যে তাদের পরিস্থিতি অন্যদের তুলনায় ভালো।
গণমাধ্যমের স্বাধীনতা হরণের যে কারণ দেখায় সরকার সেটা হচ্ছে অপপ্রচার রোধ করা। সেটা কী আদতেও হয়? নিউজিল্যান্ডে কোভিড সংক্রান্ত গুজব রোধে মিডিয়া ইতিবাচক ভূমিকা পালন করেছে।
আওয়ামীলীগের সমালোচনাকে অপপ্রচার হিসাবে বিবেচনা করে তারা মানুষের উপর খড়গহস্ত হয়েছে। মত প্রকাশের স্বাধীনতা অপপ্রচারের স্বাধীনতা না। কিন্তু সরকার এই দুইটাকে এক করে দেখে কারণ এতে তার স্বার্থই উদ্ধার হয়।