ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বায়ো মেডিক্যাল বিভাগের সাবেক প্রধান অধ্যাপক আ ব ম ফারুক বাংলাদেশের ৫টি কোম্পানির ১০টি পাস্তুরিত দুধের নমুনা তিনি ও তাঁর সহকর্মীরা দুই দফায় পরীক্ষা করেছেন। তাতে ১০টি নমুনার ১০টিতেই শরীরের জন্য ক্ষতিকর অ্যান্টিবায়োটিক পাওয়া গেছে বলে অধ্যাপক ফারুক জানিয়েছেন।
এই ফলাফল মিডিয়াতে প্রকাশের পরপরই দুধ প্রক্রিয়াজাত করার কোম্পানীরা বাংলাদেশের প্রাণী সম্পদ মন্ত্রনালয়ের সচিবালয়কে হাত করে অধ্যপক ফারুকের উপরেই চড়াও হয়েছে। অধ্যাপক ফারুকের বিরুদ্ধে মামলা করতে যাচ্ছে এই মন্ত্রনালয়।
মন্ত্রণালয়ের সচিবের অভিযোগ হচ্ছে অধ্যাপক ফারুক কোন পিয়ার রিভিউড জার্নালে না ছাপিয়েই এই নিরীক্ষার ফল প্রকাশ করেছেন এবং তাই তিনি দোষী। অধ্যপক ফারুক বলছেন যেহেতু এই গবেষণার ফলাফল জনগুরুত্বপূর্ণ তাই তিনি তা মিডিয়াতে প্রকাশ করেছেন। এমনকি তিনি এটাও বলেছেন, মন্ত্রণালয়ের উনার গবেষণার ফলাফল গ্রহণীয় মনে না হলে মন্ত্রণালয় বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা অনুমোদিত গবেষণাগারে নমুনা পরীক্ষা করতে পারে।
বাংলাদেশের পাবলিক কর্মকর্তারা জনগণের পক্ষে না দাঁড়িয়ে অভিযুক্ত দুধ বিক্রেতার পক্ষ নিয়েছে। এই দুধ বিক্রেতারাই শিশু খাদ্যে বছরের পর বছর ধরে মেলামাইন মিশিয়েছিলো।
অধ্যাপক ফারুকের বিরুদ্ধে হাস্যকর এক অভিযোগ উত্থাপন করেছে প্রাণী সম্পদ মন্ত্রনালয়। কোন গবেষণার ফলাফলই প্রকাশের আগে জার্ণালে প্রকাশ করা বাধ্যতামূলক নয়।
বাংলাদেশের জনগণ সহ সারা পৃথিবীর অ্যাকাডেমিশিয়ান, গবেষক এবং মানবাধিকার সংস্থাসমূহকে অধ্যাপক ফারুকের পাশে দাঁড়ানোর জন্য আহ্বান জানাই। আমি ইউনিসেফ ও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাকে আহ্বান জানাই যেন অধ্যাপক ফারুককে সুরক্ষা দেন। অভিযুক্ত দুধ কোম্পানীগুলোকে আন্তর্জাতিকভাবে কালো তালিকাভুক্ত করারও আহ্বান জানাই।
অধ্যপক ফারুক, আমাদের সময়ের গণনায়ক। এমন ইস্পাতদৃঢ় মেরুদণ্ড নিয়ে কাউকে দাঁড়াতে দেখলে আবার লড়াইয়ের সাহস খুঁজে পাই। মনে হয় বাংলাদেশের সব কিছু ফ্যাসিবাদ শেষ করে দিতে পারেনি। অধ্যাপক ফারুকের মতো কেউ কেউ বুকের ভেতরে এক অবিনাশী আগুন বয়ে বেড়ায়।
অধ্যাপক ফারুক আপনি আপনার বুকের আগুনটাকে জ্বালিয়ে রাখুন, নিভে যেতে দেবেন না। সারা দেশের মানুষ আপনার পাশে।