গতকাল বিকেলে চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের উদ্যোগে পটিয়া আদর্শ উচ্চবিদ্যালয় মাঠে এক বিশাল জনসভায় আয়োজন করা হয়। সে অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করে প্রচুর আওয়ামী নেতানেত্রী ও কর্মীবৃন্দ। আওয়ামী সমর্থক দ্বারা বিদ্যালয়ের পুরো মাঠ পূর্ণ হয়ে ওঠে।
আওয়ামীলীগ সমর্থকরা মাঠ বলতে গেলে একদম গরম করে রেখেছিলেন। কিন্তু তাও স্বার্থের জন্যই। কেন বলছি এই কথা? সেই জনসভায় ছিল ভালো ভালো খাওয়া দাওয়ার ব্যবস্থা। জনসভায় উপস্থিত সবাইকে এক প্যাকেট করে বিরিয়ানি দেওয়া হয় খাওয়ার জন্য। এবং দুর থেকে যারা এসেছিলেন তাদের জন্য ছিল অন্য ব্যবস্থা, তাদের যাতায়াতের সুবিধার জন্য ছিল ভাঁড়া করা বাস ও মাইক্রোবাস সার্ভিস, যাতে করে তাদের যাতায়াত ব্যবস্থা আরামদায়ক হয়।
এখন একটি রাজনৈতিক দল তার সদস্যদের জন্য তো এটুকু করতেই পারে, তাতে দোষের কিছু দেখিনা। কিন্তু এই অনুষ্ঠান আয়োজনে খরচ হয়েছে বিপুল পরিমাণ টাকা। এই খরচের অর্থের উৎস কি সেটা আর নাই বলি। দেশের সাধারণ জনগণের ট্যাক্স এর টাকা যে আওয়ামীলীগ প্রকাশ্যে মেরে দিচ্ছে তা নতুন কোন বিষয় না।
সেই জনসভায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন “আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এলেই দেশের উন্নয়ন হয়”। উন্নয়ন হয় ঠিকই, কিন্তু দেশের না আওয়ামিলিগার দের। এবং আওয়ামীলীগ সমর্থকরা যে একেকজন বড় ধান্দাবাজ সেই বিষয় আমাদের আন্দাজ করে নিতে আসলে তেমন বেগ পেতে হয় না।
এবার আসি আসল কথায়। এই জনসভার জন্য মাঠে বিশাল বড়ো গেট তৈরি করা হয়েছিল। এবং গেটের দুই সাইডের দুই পিলারের একটায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও আরেকটায় শেখ মুজিবুর রহমানের ঢাউস সাইজের প্রতিকৃতি লাগানো হয়েছিল। যাক ভালো কথা, আওয়ামীলীগ এর অনুষ্ঠান, তারা তো এসব লাগাবে এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু অনুষ্ঠান শেষেই ঘটলো দুর্গতি।
অনুষ্ঠান এর শেষ পর্যায়ে বক্তব্য রেখেছিলেন শেখ হাসিনা। এবং ততক্ষণ পর্যন্ত কাউকে খাবার দেওয়া হয়নি। কারন আমাদের মাঝে অনেকের স্বভাব, খাওয়া দাওয়া শেষ হলেই বাড়ি চলে যেতে চায়, ভাষণ শুনতে চায় না। তাই অনুষ্ঠানের শেষ পর্যায়ে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ এর শেষ পর্যায়ে সবাইকে খাবার দেওয়া হলো।
মজার বিষয় হলো খাবার দেওয়ার সাথে সাথেই একদম হুড়োহুড়ি পড়ে গেলো, কে কার আগে খাবার নিবে। তাদের প্রাণপ্রিয় নেত্রী যে এদিকে ভাষণ দিচ্ছে সেদিকে কারো কোন খেয়াল নেই। সবাই বিরিয়ানি নিয়েই ব্যস্ত। এদিকে এসব দেখে প্রধানমন্ত্রী আয়োজক দের ওপর ক্ষিপ্ত হন। পরে অবশ্য আয়োজকরা পরিস্থিতি সামলে নেয়।
কিন্তু বিপাক হয় অনুষ্ঠানের শেষে। প্রধানমন্ত্রীর ভাষণও শেষ, খাওয়া দাওয়াও শেষ, এখন আর মাঠে বসে থেকে কি লাভ, এর চেয়ে বাসায় চলে যাওয়া ভালো, এই ভেবে সবাই তড়িঘড়ি করে মাঠ প্রাঙ্গণ ছেড়ে যেতে শুরু করলো। কে কার আগে মাঠ ছাড়বে, এই নিয়ে যেন প্রতিযোগিতা। এই মাঠ ছাড়ার প্রতিযোগিতায় সবাই মাঠের বাইরে বের হতে লাগলো, আশেপাশের কোন কিছুকে তোয়াক্কা না করেই। এবং এতে করেই গেট থেকে পড়ে যায় শেখ মুজিবুর রহমান-এর ঢাউস সাইজের প্রতিকৃতিটি। আওয়ামীলীগ সমর্থকরা শেখ মুঝিবের প্রতিকৃতির তোয়াক্কা না করেই একে পায়ে মাড়িয়ে বাইরে বেরিয়ে যেতে লাগলো। তার মধ্যে আওয়ামীলীগ সমর্থকদের মধ্যে কেউ একজন শেখ মুঝিবের সেই প্রতিকৃতিটি এক পাশে আবর্জনা ফেলার স্থানে ছুড়ে ফেলে দিলো।
এই ঘটনাতেই বুঝা যায় আওয়ামীলীগারদের সবাই কত বড় ধান্দাবাজ।