পাহাড়ি অঞ্চল গুলো শান্তিচুক্তির ১৫ বছর পর আজও অশান্ত। এই শান্তি কখনও বিনষ্ট হয় দুই বিবদমান পাহাড়ি দলের সংঘর্ষে আবার কখনও পাহাড়ি এবং বাঙ্গালীর উভয়ের সংঘর্ষে। ফলশ্রুতিতে সাধারণ পাহাড়িরা চরম আতংকে দিনাতিপাত করছে।
পার্বত্য চট্টগ্রামের জন্য ঐতিহাসিক দিন ২রা ডিসেম্বর৷ ১৯৯৭ সালের এই দিনে পাহাড়ে দুই দশকেরও বেশি সময় ধরে চলা সংঘাতপূর্ণ পরিস্থিতির অবসান ঘটানোর জন্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির সাথে সরকারের ঐতিহাসিক শান্তি চুক্তি স্বাক্ষর হয়৷ তখন সরকারের পক্ষে চুক্তি স্বাক্ষর করেন পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক জাতীয় কমিটির আহ্বায়ক আবুল হাসনাত আবদুল্লাহ এবং পার্বত্য চট্টগ্রাম অধিবাসীদের পক্ষে চুক্তি স্বাক্ষর করেন জনসংহতি সমিতির সভাপতি ও বর্তমান পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদের চেয়ারম্যান সন্তু লারমা৷
শান্তিচুক্তির ১৫ বছর পরও পাহাড়ে শান্তি আসেনি৷ কখনো প্রতিদ্বন্দ্বী দুই পাহাড়ি দলের সংঘাত, কখনও বা পাহাড়ি বাঙালি দাঙ্গায় প্রতিনিয়ত সবুজ পাহাড় রক্তে লাল হচ্ছে৷ এমন অবস্থায় শান্তিচুক্তি বাস্তবায়ন না হওয়ার জন্য সরকারের আন্তরিকতাকেই দায়ী করলেন পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদের চেয়ারম্যান সন্তু লারমা৷
তবে সন্তু লারমার এই অভিযোগ ঠিক নয় বলে দাবি পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী দীপংকর তালুকদারের৷ তিনি বলেন, চুক্তির অনেকগুলো ধারা বাস্তবায়ন করা হয়েছে৷
সরকারের আন্তরিকতা নিয় প্রশ্ন তুলে সন্তু লারমা বলেন, চুক্তি স্বাক্ষরের আগে যে পথ অবলম্বন করতে হয়েছে এখন চুক্তি বাস্তবায়নের জন্য তাদের কি সেই পথেই যেতে হবে? সময়ই বলে দেবে এই প্রশ্নের উত্তর৷
সন্তু লারমা এবং তাঁর অনুসারীরা খাগড়া ছড়ি স্টেডিয়ামে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে আনুষ্ঠানিকভাবে অস্ত্র সমর্পণ করেন চুক্তি স্বাক্ষরের পর। পরবর্তীতে আরও প্রায় ২ হাজার শান্তিবাহিনীর নিয়মিত সদস্য অস্ত্র সমর্পণ করেন। স্থানীয় জনগণ সহ দেশবাসীর স্বপ্ন ছিল পাহাড়ে অবশেষে শান্তি ফিরে আসবে। কিন্তু এখন ও সবাই শঙ্কিত শান্তির স্থলে নিয়মিত ভয়াবহ সংঘর্ষে। সবার মনে প্রশ্ন জেগেছে, সরকার আসলে কতটুকু আন্তরিক পাহাড়ে শান্তি ফিরিয়ে আনার ব্যাপারে? সংশ্লিষ্ট সকলের আশা, সরকার যদি আন্তরিকভাবে পাহাড়ের সমস্যাগুলির ব্যাপারে মনোযোগ দেয় তবে শান্তিচুক্তির প্রকৃত বাস্তবায়ন হবে এবং পাহাড়ে আসবে শান্তি।