প্রযুক্তি আজ কত উচ্চে পৌঁছে গেছে ভাবুন একবার ! সামান্য একটা এন্ড্রয়েড মোবাইলে একটা apps এর সাহায্যে কয়েক সেকেন্ডে ব্লাড প্রেশার মাপা যাচ্ছে। অথচ এই সামান্য কাজটার জন্য এককালে কতই না ভোগান্তি হয়েছে।
থামুন !
প্রযুক্তির এতটাও উন্নতি হয়নি। আসুন জানা যাক এই জোচ্চোরি apps গুলোর জীবন বৃত্তান্ত।
এখানে জানবেন –
- Apps গুলো কেন তৈরি।
- কীভাবে এগুলো কাজ করে।
- এগুলো যে সম্পূর্ণ মিথ্যা তার প্রমাণ।
- Apps গুলো কেন তৈরি ঃ
প্রথমত, পৃথিবীতে সামান্য কিছু মোবাইলে হার্টবিট পরিমাপ করার জন্য উচ্চ প্রযুক্তিসম্পন্ন সেন্সর আছে ( যেমন, Samsung Galaxy S5 ) ।
আবার, মানুষের রক্তচাপ অর্থাৎ ব্লাড প্রেশারের সাথে হার্টবিটের কিছু যোগসূত্র আছে। তাই এইসব দামী এবং উচ্চ প্রযুক্তিসম্পন্ন মোবাইলে ব্যবহারকারীর বয়স, ওজন, উচ্চতা, হার্টবিট প্রভৃতি হিসাব করে ব্লাড পেশারের একটা অনুমান দাঁড় করানো হয়। এগুলোও সঠিক নয়। অনুমান।
তাহলে আমার মতো জনতা কি করবে ? আমার মোবাইল তো ৫০০০ টাকার ! কোনো সেন্সরের বালাই নাই। সেক্ষেত্রে বের হল কিছু apps. প্রধানত মজা করার জন্য। বন্ধুকে অবাক করে দেওয়ার জন্য, ” দেখ, আমার মোবাইলে প্রেশারও মাপা যায় ! “
কিন্তু ঘটনা হল উল্টা। প্রযুক্তি সম্পর্কে অজ্ঞ লোকজন ব্যাপারটা সিরিয়াসলি নিয়ে নিল। আর বাঙালীর তো গল্পের সাথে গুজব আছেই। শুরু হয়ে গেল ডিজিটাল কুসংস্কার।
- কীভাবে এগুলো কাজ করে ঃ
অত্যন্ত সহজ প্রোগ্রামিং দিয়ে এগুলো তৈরি। এতে কমান্ড দেওয়া আছে, apps টি চালু করার পর আপনাকে নির্দিষ্ট জায়গায় আঙ্গুল লাগাতে বলবে। এরপর সেকেন্ড দুয়েক অপেক্ষা করবে। ( apps ভেদে ভিন্ন হতে পারে ) এরপর ১২০ বাই ৮০ এর কাছাকাছি কোনো প্রেশার শো করবে। যেমন : ১২৬ বাই ৭৯ , ১১৮ বাই ৮৪ এরকম।
স্বাভাবিক ভাবেই সাধারণ মানুষ বিশ্বাস করে বসবে। এতেই সেই app এর কাজ হাসিল।
- এগুলো যে সম্পূর্ণ মিথ্যা তার প্রমাণ ঃ
নিম্নবর্ণিত কাজ গুলো একে একে করুন –
১. আপনার প্রিয় ব্লাড পেশার মাপার app টি মোবাইলে ইন্সটল করে ওপেন করুন।
২. নিজের প্রেশার মেপে দেখুন সুস্থ আছেন কিনা !!
৩. এবার আশপাশ থেকে একটা আলু যোগাড় করুন।
৪. এবার app টি তে যে জায়গায় আঙ্গুল লাগিয়ে নিজের প্রেশার মেপেছেন সেখানে আলুটা চেপে ধরুন।
৫. কিছুক্ষণ পর দেখবেন আলুর প্রেশার শো করছে।
৬. আলুর প্রেশার ১২০ বাই ৮০ এর কাছাকাছি দেখলে বুঝবেন আলু সুস্থ আছে।
৭. একই ভাবে বাড়ির কলা, শসা, গাজর আর মুলার প্রেশার মেপে ফেলুন।
কয়েকদিন পর হয়তো মোবাইল দিয়েই ডায়াবেটিস টেস্ট, প্রেগনেন্সি টেস্ট, এক্সরে, MRI সব করতে পারবেন।
শেষ কথা ঃ প্রযুক্তির উন্নতি হয়েছে এই অসিলায় আজে বাজে খবর শুনে মনে প্রাণে বিশ্বাস করবেন না। নিজ বুদ্ধিতে অন্তত একবার ভেবে দেখুন।