বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর একমাত্র সন্তান সজীব ওয়াজেদ জয়। পিতা মরহুম ওয়াজেদ আলী মিয়া। বাংলাদেশের রাজনীতিতে ভবিষ্যতে সামনে আসবে কিংবা শেখ হাসিনার পরে তিনিই আওয়ামীলীগের হাল ধরবেন এই কথাটি এখন ধ্রুব সত্যের মত আওয়ামীলীগের নেতা ও কর্মীরা জানেন। বাংলাদেশের পরিবারতান্ত্রিক যে পদ্ধতি বিরাজমান রয়েছে সেটার ধারাবাহিকতার রেশ ধরেই সজীব ওয়াজেদ জয় বাংলাদেশের রাজনীতিতে আসবেন এবং একেবারে নিজের সম্পত্তির মত এই দেশের সম্পদ ভোগ করবেন এটাই যেন বাংলাদেশে এখন নিয়তি হয়ে দাঁড়িয়েছে। একদিন তিনিই হয়ত বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী হবেন এবং বাংলাদেশের জনতার উপর ছড়ি ঘোরাবেন ঠিক তার মা এখন যেভাবে বাকশালের ছড়ি ঘোরাচ্ছেন সবার মাথার উপর। সাম্প্রতিক সময়ে উনি দেশনেত্রী খালেদা জিয়া ও আমাদের আগামী বাংলাদেশের নেতা তারেক রহমানকে নিয়ে যেসব নোংরা ও কদর্য কথা বলেন তাতে করে মনে হয় এই লোকটির মানসিক সমস্যা রয়েছে। অভব্যতা, অসভ্যতা, বেয়াদপি জয়ের একমাত্র সম্বল।
এইসব চারিত্রিক গুনাবলী অবশ্য সে তার মা ও নানার কাছ থেকেই পেয়েছে এই কথাটি আসলে বলা বাহুল্য মাত্র। তার নানা যেমন এই বাংলাদেশে গুম ও খুনের রাজনীতি শুরু করেছিলো, যেভাবে সে শুরু করেছিলো এক নায়কতান্ত্রিক রাজনীতির প্রথা ঠিক তেমনি তার মা-ও সেই রাজনীতির ধারক ও বাহক হয়ে এই বাংলাদেশেই এখন সাধারণ বাংলাদেশীদের জীবনকে দূর্বিষহ করে দিচ্ছেন। শেখ হাসিনার এই সন্তান বাংলাদেশের রাজনীতিতে এক সময় চালকের আসনে হয়ত বসবে আর এই বাস্তবতা বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে আমাদের মেনে নেয়া ছাড়া হয়ত আর উপায় নেই। কিন্তু বাংলাদেশের এই ভাবী প্রধানমন্ত্রীর পূত্রের ব্যাক্তিগত জীবন যাপন, সামাজিক পরিচয়, আচরণ কেমন? দীর্ঘ সময় আমেরিকায় থেকেছে সে সুতরাং জীবনের একটা বড় অংশের ভার আমেরিকাকেই নিতে হয়েছে দূর্ভাগ্যজনক ভাবে। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে জয়ের এই আমেরিকা জীবন কেমন ছিলো। এই ব্যাপারগুলো জানতেই আমরা গবেষনা করেছি সজীব ওয়াজেদ জয় সম্পর্কে। জানবার চেষ্টা করেছি সেখানে তার জীবন যাপ ও আচার আচরনের নানাবিধ প্যাটার্ন। আর সে গবেষনায় আমরা যা পেয়েছি সেটি অত্যন্ত উদ্বেগজনক। মাতাল হয়ে গাড়ি চালনা থেকে শুরু করে পতিতা নিয়ে হোটেলে জীবন যাপন কোনোটি-ই আর সে বাকী রাখেনি এই জীবনে। ভুয়া নাম্বার প্লেটে ধরা খাওয়া, অবৈধ অস্ত্র সহ ধরা, কোনটি বাদ গেছে তার জীবন থেকে? কোনো কিছুই বাদ যায়নি। চলুন না ঘুরে আসি জয়ের সকল অবৈধ জীবন যাপনের সে দুনিয়া থেকে।
আপনারা হয়ত অনেকেই জানেন যে শেখ হাসিনার পিতা ১৯৭৫ সালে যখন নিহত হন তখন শেখ হাসিনা ও তার বোন শেখ রেহানা দুজন’ই সে সময় জার্মানীতে ছিলেন। হাসিনার স্বামী সে সময় জার্মানীতে কর্মরত থাকায় এবং দুই বোনের সন্তান সন্ততি সেখানে থাকায় সে যাত্রায় প্রাণে বেঁচে যান শেখ মুজিবের পরিবারের বাকি সদস্যরা। একটা পর্যায়ে শেখ হাসিনা ও তার পরিবার ভারতে রাজনৈতিক আশ্রয় গ্রহন করে এবং সেই হিসেবে তার সন্তান সন্ততিরা ভারতেই তাদের প্রাথমিক পড়াশোনার পর্বটা শুরু করেন। যেহেতু এই লেখাটি সজীব ওয়াজেদ জয়কে উদ্দিস্ট ও তার ব্যাপারে একটি অনুসন্ধানী প্রতিবেদন সেহেতু আমাদের মূল বক্তব্য তার দিকেই নির্দিষ্ট করছি। ১৯৭১ সালে জন্ম নেয়া আমাদের এই বরপূত্র জীবনের অধিকাংশ সময় কাটিয়েছেন তার রাজ্য বাংলাদেশের বাইরে । জয়ের প্রাথমিক পড়াশোনা হয়েছে ভারতে কেননা শেখ মজিব মারা যাবার পর হাসিনা রাজনৈতিক আশ্রয় নিয়েছিলেন ভারতেই। এই সময়ে জয় এক শিখ ধর্মালম্বী মেয়ের প্রেমে পড়ে যান এবং তাকেই বিয়ে করবার জন্য তার মাকে বলেন। যদিও আমাদের সুপার সেকুলার প্রধান মন্ত্রী সেই শিখ মেয়েকে ঘরের বউ করবে না বলে গোঁ ধরেছিলো এবং শিখ ধর্মের বলে তাকে মেনে নেবেনা বলেও বলেছিলো। কিন্তুই ছেলের জেদের কারনে হাসিনা আর কিছু করতে পারেনি সে সময়।
নেকেই ভাবছেন লেখার এই পর্যায়ে এসে যে কেন আমি জয়ের বিয়ে নিয়ে বলব ? এটি কি আদৌ শোভনীয় ? এটি কি আদৌ প্রয়োজনীয় ? আমি পরিপূর্ণ শ্রদ্ধা রেখেই বলতে চাই, প্রেমে জাত-কূল এসব কখনই বিচার করে না । যে কারোরই যে কাউকে ভালো লাগতে পারে । জয় যাকে খুশি তাকেই ভালবাসতে পারে । আমি মূলত এই বিয়ের সময়কার, শেখ হাসিনা ভূমিকাই বলতে চেয়েছিলাম । তিনি সেকুলার বলে আওয়ামীলীগকে পরিচয় করান । অসাম্প্রদায়িক দেশের কথা বলেন । এই বিয়েতে সেই অসাম্প্রদায়িক চরিত্র , সেকুলার রাজনীতি নিয়ে আমাদের পাবলিকদের যে মূলো ঝুলানো হচ্ছে, সে কথাই বলা হবে । পোস্টারে আল্লাহ সর্ব শক্তিমান, শিখ মেয়েকে না মেনে নেয়া, খেলাফত মজলিশের সাথে ঐক্য সব এক সূত্রে গাঁথা । সুতরাং আপনাদের এই একটি ক্ষেত্রে আমি স্পষ্ট করে বলতে চাই যে, জয় সাহেব কাকে বিয়ে করলেন কিংবা কেন বিয়ে করলেন, ব্যাক্তিগত ভাবে এই লেখার সাথে সে বিষয়গুলো একেবারেই যায়না । এমনকি অন্য কোন ক্ষেত্রেও এই বিষয়গুলো যায় না । এই বিয়ের সাথে মূলত যায় শেখ হাসিনার কিছু মানসিক চিন্তার বুনন । যে বুননের সাথে সেকুলার রাজনীতির সাগু খাওয়ানো,অসাম্প্রদায়িক রাষ্ট্রের মুলো ঝোলানো সবই এক করে সূত্রে ফেলে দেয়া যায় ।
আমি প্রমাণ করে দিতে পারি আওয়ামীলীগের অসাম্প্রদায়িক চেতনা,জাতীয় পার্টির হেন চেতনা, ধন চেতনা এগুলো কেবল বই সর্বস্ব । এইসব তত্ব কথা শুধু তাদের মেনোফেস্টো গুলোতেই লেখা থাকে । আসল কাজ হলো, জনগনের অর্থ আত্মসাত । উদাহরণ দিয়ে বোঝাই, ধরা যাক একজন আলেম খুব বক্তৃতা দিচ্ছে । “নারীদের মর্যাদা দিতে হবে । জেনা করা হারাম । তাদের দিকে মন্দ ভাবে তাকানো হারাম । মায়ের মর্যাদা দিতে হবে । এইসব” । এই হুজুর যদি একা ঘরে ক্যাট্রিনা কায়িফকে উলংগ অবস্থাতে পেয়ে যান , আমি শতভাগ নিশ্চিত , সেই হুজুরে আলা, হযরত সাহেব কিন্তু বলে উঠবেন, “আরে রাখ বালের ধম্ম-কম্ম, আগে খাইয়া লই” । ঘটনা হচ্ছে এই । রাজনীতিবিদ্দের কোন মেনিফেস্টো, বাল ফেস্টো, শাউয়া ফেস্টো কিছু নাই । এইসব বইখাতার নিয়ম নীতি কোন কালে কে মেনে চলেছিলো ? আমাকে কি কেউ একটি সরকারের আমল দেখাতে পারবেন , যারা তাদের মেনিফেস্টোর সব অংগীকার পূর্ণ করেছিলো ? কেউ পারবেন না । তারা শুধু আগে আমাদের “খেয়ে” নিতে চায় ।এটাই মূল এবং শেষ কথা ।
আবারো জয়ের প্রসঙ্গে ফিরি । জয়ের ভাষায়, “I have a Bachelor of Science with a triple major in Physics, Mathematics and Computer Science from St. Joseph’s College, an affiliate of Bangalore University. I am also a graduate of the University of Texas in Arlington, Texas with a Bachelor of Science in Computer Engineering. I am currently back in school, working towards a Masters in Public Administration at the John F. Kennedy School of Government at Harvard University.” ( সজীব আহমেদ ওয়াজেদের ব্লগ থেকে)
ভালো কথা । এরকম ওয়েল কোয়ালিফাইড এবং একজন শিক্ষিত ছেলে বাংলাদেশের দরকার । গর্ব লাগে বাংলাদেশের কাউকে পড়াশোনা করে শিক্ষিত হতে দেখলে । কিন্তু যখন ভাবি জয়ের এই পড়ালেখার পেছনে তার অর্থায়নের কথা , তখন চিন্তিত হই । আমি নিজে গ্রাজুয়েশন করেছি ইউনিভার্সিটি অফ লন্ডন থেকে । আমার প্রতি বছরের টিউশন ফি ,রেজিস্ট্রেশন ফি,পরীক্ষার ফি যোগাতে জান কয়লা হয়ে যেত । একবেলা খেতাম । অমানবিক প্ররিশ্রম করেছি ভ্যাকেশনে, টার্ম টাইমে । সে আমি যখন দেখি একজন একজন প্রধানমন্ত্রী পূত্র টেক্সাস,হার্ভার্ড,ব্যাঙ্গালোর থেকে ডিগ্রী নিচ্ছেন তখন খুব আনন্দ লাগে । গর্ব হয় । কিন্তু চিন্তাও হয়, এসব কি হালাল টাকায় হচ্ছে ? একটা তুলনা মূলক চিত্র দেই,
টেক্সাস ইউনিভার্সিটির মোটামুটি খরচ প্রতি বছর-
Estimated Costs ( University of Texas Arlington)
Based on the information given above, the estimated costs for one year at UT Arlington can range from
$13,520 to $24,609
আবার পোস্ট গ্রাজুয়েশনের জন্য হার্ভার্ডের খরচ এক বছরে-
Tuition and Fees for the MC/MPA Program
Tuition | $37,576 |
Summer Session | $6,611 |
Activity Fee | $150 |
Emergency On-Campus Health Services Fee | $1,126 |
Health/Hospital Insurance (BC/BS) | $1,714 |
Total Tuition and Fees | $47,177 |
Room and Board | $21,530 |
Personal/Travel | $5,266 |
Books and Supplies | $2,438 |
Total Indirect Costs | $29,234 |
Total (Direct and Indirect Costs) | $76,411 |
উনি সর্বমোট কত বছর ধরে ব্যাচেলর ডিগ্রী করেছেন এটি নিয়ে নানা মুখরোচক কথা বার্তা শোনা যায়। জয়ের এই পড়ালেখার পেছনে তার অর্থায়নের বিষয়টিও আলোচনার দাবী করে। এই পর্যায়ে আমাদের জানা প্রয়োজন যে জয় হার্ভার্ডে পড়বার অর্থ কোথা থেকে আসলে পেলো।
পকেটের পয়সায় যারা বিদেশে পড়াশুনা করেন তাদের প্রতি বছর টিউশন ফি, রেজিস্ট্রেশন ফি, পরীক্ষার ফি যোগাতে অমানবিক পরিশ্রম করতে হয় ভ্যাকেশনে ও টার্ম টাইমে। সেখানে একজন প্রধানমন্ত্রীর পুত্র টেক্সাস, হার্ভার্ড, ব্যাঙ্গালোর থেকে ডিগ্রী নিচ্ছেন এটা যেমন গর্বের কথা তেমনি ভাবনার বিষয়- এত খরচের টাকা আসে কোত্থেকে? আসুন আমরা টেক্সাস ও হার্ভার্ডের একটা খরচের আনুমানিক হিসাব বের করি। • টেক্সাস ইউনিভার্সিটির মোটামুটি খরচ প্রতি বছর ১৩৫২০-২৪৬০৯ মার্কিন ডলার, যা বাংলাদেশী মুদ্রায় আনুমানিক ১১-২০ লাখ টাকার সমান। অন্যদিকে হার্ভাডের এমসি/এমপিএ প্রোগামে এক বছরের খরচ ৭৬৪১১ মার্কিন ডলার [Tuition $37576 + Summer Session $6611+ Activity Fee $150+ Emergency on campus health services Fee $1,126+ Health/Hospital Insurance (BC/BS) $1714+ Room and Board $21530+ Personal/Travel $5,266+ Books and Supplies $2,438= Total (Direct and Indirect Costs) $76,411]. যা প্রায় ৬৩ লক্ষ টাকার সমান। অর্থাৎ গ্রাজুয়েজন ও মাষ্টার্স মিলিয়ে খরচ বাংলাদেশী মুদ্রায় প্রায় ১ কোটি টাকার উপরে।
এখন জয়ের এই শিক্ষা খরচের সাথে তার মা হাসিনা ও বাবার আয়ের হিসেব নিকেশটা দেখা নেয়া যাক। ২০০১-২০০৬ সময়ে শেখ হাসিনা বিরোধী দলীয় নেতা ছিলেন, মন্ত্রীর সমপরিমাণ বেতন পেতেন। বাংলাদেশে একজনমন্ত্রীর বেতন ৩২,০০০ টাকা মিনিষ্টার্স প্রিভিলেজ এক্ট ২০০৫ অনুযায়ী। ডঃ ওয়াজেদ মিয়াও একজন নামকরা পরমাণু বিশেষজ্ঞ ছিলেন, তিনিও উপার্জনক্ষম ছিলেন। দুজনের উপার্জন থেকে পারিবারিক খরচ বাদ দিয়ে কত সাশ্রয় করা সম্ভব? ওয়াজেদ সাহেব মৃত্যুকালে ৩০ লাখ টাকা রেখে গেছেন, যা একজন সরকারী উচ্চপদস্থ কর্মকর্তার সদুপায়ের সাথে সঙ্গতিপূর্ণ।
এদিকে দেশের পে স্কেল বিবেচনা করলে সম্ভবত সবচাইতে বেশী বেতন পান এমন মানুষ হচ্ছেন রাষ্ট্রপতি । তাঁর বেতন সর্বমোট ৪৫,০০০ টাকা ( আমি সময়টা জয়ের শিক্ষাকালীন বছর ২০০৬-০৭ ধরে বলছি)। এই টাকা রাষ্ট্রপতি পেলে প্রধানমন্ত্রী কত পান ? ধরে নিলাম তিনও একই টাকা পান । আবার যদি ২০০১-২০০৮ পর্যন্ত ধরি , তখন বলতে হয় এই সময়ে শেখ হাসিনা তো বিরোধী দলীয় নেতা ছিলেন । তখন কি উনি বেতন পেতেন ? একটা ব্যাপার লক্ষ্যনীয় যে, জয়ের বাবাও একজন নামকরা পরমাণু বিশেষজ্ঞ ছিলেন । সুতরাং তিনিও উপার্জনক্ষম ছিলেন । প্রধানমন্ত্রীর বেতন যদি ৪৫,০০০ টাকা হয় , তবে ওয়াজেদ মিয়ার বেতন কত ছিলো ?আবার শুধু বেতন ধরেই বিবেচনা করলে হবে না বরং তাদের পারিবারিক খরচ সহ আরো নানাবিধ হিসেব বিবেচনায় রাখতে হবে।
জয়ের হার্ভার্ডের গ্রাজুয়েশন পরবর্তী সময়কার মন্তব্য শুনে এটা পরিস্কার বোঝা যায়, ঐসময়ে তার কোন কাজ ছিলো না। বাংলা পত্রিকার সাথে এক আলাপকালে সজীব ওয়াজেদ জয় বলেন, ”আমার মায়ের স্বপ্ন ছিল হার্ভার্ড থেকে আমি গ্রাজুয়েশন করি। তাঁর এই স্বপ্ন পূরণে সফল হতে পেরে ধন্য মনে করছি। এছাড়াও আরো অনেক কিছুই করার আছে। তার সবটাই চেষ্টা করবো পূরণ করতে। তিনি বলেন, আমি এখন চাকুরী খুঁজছি। যে কোন প্রাইভেট কোম্পানীতে কনসালটেন্ট হিসেবে কাজ করতে চাই। এজন্য আবেদন পাঠাচ্ছি বিভিন্ন জায়গায়। এজন্য তিনি দেশবাসীর দোয়া প্রার্থী বলে জানান।”
আবার আরেকটি ব্যাপার এখানে গূরুত্বপূর্ণ যে, এটর্নী ক্রিস্টিনা ওভারমায়ারকে জয় বিয়ে করেছেন ২০০২ এর ২৬শে অক্টোবর। সেক্ষেত্রে যদি যুক্তির খাতিরে ধরে নেয়া যায় তার স্ত্রী তাকে অর্থ সাহায্য করেছেন তাতেও বৃহদ দুটি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপরে উল্লিখিত অর্থের সংস্থান পরিস্কার হয় না। ২০০৮ সালের নির্বাচনকালে জয়ের মাতা শেখ হাসিনা তার সম্পত্তির যে হিসাব দিয়েছেন, তাতে ৩,৬৫,০২,৯০৪ টাকার সম্পদের বিপরীতে ২০০৭-০৮ বছরে পারিবারিক খরচ ছিল ২ লাখ টাকা। এতে করে শেখ হাসিনার স্থায়ী সম্পত্তি ও অপারপর হিসেব বিবেচনা করেও জয়ের এ সব শিক্ষাখরচের অর্থের উৎস খুঁজে পাওয়া যায় না। তার উপরের মন্তব্যটাকে আমি যদি বিশ্লেষন করি, তবে বলতে হয় সে সময় তার কোন চাকুরী ছিলো না । আরেকটি ব্যাপার এখানে গূরুত্বপূর্ণ যে, জয় এটর্নী ক্রিস্টিনা ওভারমায়ার ওয়াজেদকে বিয়ে করেছেন ২০০২ এর ২৬শে অক্টোবর । সেক্ষেত্রে যদি যুক্তির খাতিরে ধরেও নেই তার স্ত্রী তাকে অর্থ সাহায্য করেছেন তাতেও উপরে উল্লেক্ষিত অর্থের পরিমাণের সাথে বড় বড় দুইটি ইউনিভার্সিটির অর্থের সংস্থান আমার কাছে পরিষ্কার হয় না । এই নির্বাচনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার সম্পত্তির যে হিসাব দিয়েছেন, তাতে করে স্থায়ী সম্পত্তি ও অপারপর হিসেব বিবেচনা করেও জয়ের শিক্ষার অর্থ সংস্থান আমার কাছে নিশ্চিত নয় । এর মধ্যে জয়ের যে কয়টি বাড়ীর সন্ধান পাওয়া গেছে , সে সম্পর্কেও বলতে গেলে খুব চিন্তিত হতে হয় এই ভেবে যে, টেক্সাস ইউনিতে পড়া, হার্ভার্ডে পড়া সব মিলিয়ে এই অর্থ গুলো কি করে যোগার হচ্ছে ।
SAJEEB A WAZED
912 TWIN CREEK DR
DESOTO, TX 75115
SAJEEB A WAZED
5907 HIGHDALE CIR
ALEXANDRIA, VA 22310
ওয়ার্ল্ড ইকোনোমিক ফোরামের ইয়ং গ্লোবাল লিডার ২০০৭ হওয়ার জন্য জয় নিজের পরিচিতি যেইভাবে দেয় তা নিচে তুলে ধরা হল –
Wazed , Sajeeb YGL 2007
Member, Awami League, Bangladesh , Bangladesh
Sajib Wazed Joy is a member of the Awami League, the oldest and largest political party in Bangladesh. He currently manages the communication and lobbying efforts of the Awami League in Washington, D.C., working directly with the US Administration. Previously, he served under the former Prime Minister of Bangladesh, Sheikh Hasina. After moving to the US, he founded Mvion Inc., a startup company through which he developed prototype software and raised US$ 8 million in venture capital. Mvion eventually brought in revenues of approximately US$ 2,00,000 per month and was evaluated at US$ 80-90 million. Sajib also founded the Bongobondhu Foundation of US, which provides basic healthcare and immigration assistance to needy expatriate Bangladeshis in the US. He also raises funds for its sister organization, the Bongobondhu Trust in Bangladesh, and promotes democracy and human rights issues there in partnership with the US Administration.
(সূত্রঃ আমার ব্লগের ব্লগার এহহামিদার একটি পোস্ট থেকে নেয়া)
উপরের এই বর্ণনা থেকে জানা যায় জয়ের কি কি কোম্পানী রয়েছে, কোথায় কোথায় সে কি কি করেছিলো। এখন প্রশ্ন হচ্ছে এমন একজন ইয়াং গ্র্যাজুয়েট এইসব কোম্পানী বা বিনিয়োগের অর্থ পেলো কোথায়? সেসব প্রশ্ন তরপ্তাজা থাকতে থাকতে আবার আসুন এই জয় সাহেবের আমেরিকায় কর্মকান্ডগুলোকে আমরা একটু জেনে নেই।
জয়ের ড্রিঙ্ক ড্রাইভিং,বেশী স্পিডে গাড়ী চালানো এবং আরো কিছু ক্রিমিনাল রেকর্ড এ সম্পর্কিত নিয়ে একটা পর্যায়ে আমি নিজেই অনুসন্ধানে নামি । এ ব্যাপার গুলো আমি এড়িয়ে যেতাম শুধু একটি কারনে যে, এমনটি হতেই পারে , এই ভেবে । যারা গাড়ি চালিয়েছেন তারা জানেন বেশী মটর ওয়েতে হাই স্পিডে গাড়ি চালানো আইনের দৃষ্টিতে অন্যায় হলেও এট অহরহ অনেকেই পান আসাবধানতার কারনে । যদিও পরবর্তীতে এটি ক্রিমিনাল রেকর্ড হিসেবে লিপিবদ্ধ থাকেন । জয় অবশ্য একাধিকবার হাই স্পিডে গাড়ি চালিয়ে কোর্টে জবাবদিহিতা করেছেন । মদ্যপ অবস্থায় তার গাড়ি চালানো, হ্যান্ড গান নিয়ে তার চলাফেরা অবশ্যই প্রশ্ন রাখে, জয় সাহেব কি আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল নন ?
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয় দীর্ঘদিন থেকে যুক্তরাষ্ট্রে স্থায়ীভাবে বসবাস করছেন। যুক্তরাষ্ট্রে আইন লঙ্ঘন ও অনৈতিক কাজে বেশ কয়েকবার গ্রেফতার হন এবং বিচারের বিভিন্ন মেয়াদে সাজাপ্রাপ্ত হন। তারেক অমানবিক নির্যাতনের শিকার হয়ে চিকিৎসার জন্য বিদেশ গেছেন। তার বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ এখনও প্রমানিত নয়। অন্যদিকে ভারতীয় স্ত্রীর সাথে বিচ্ছেদ হওয়ার পর হাসিনাপুত্র জয় দেশি অর্থ-সম্পদ নিয়ে বিদেশে দ্বিতীয় স্ত্রী নিয়ে বেপরোয়া জীবন যাপন করে দেশের জন্য বদনাম কামাচ্ছে। ১৪ জুন ১৯৯৮ টেক্সাসে টারন্ট কাউন্টিতে জয় গ্রেফতার হন। তার বিরুদ্ধে অবৈধ অস্ত্র রাখা, মাতাল অবস্থায় গাড়ি চালানোর অভিযোগ আনা হয়। অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় আদালত তাকে ১২০ দিন কারাবাস, ২ বছরের প্রোবেশন এবং ৫০০ ডলার জরিমানা করে। ৬ ফেব্রুয়ারি ২০০৬ ভার্জিনিয়ার হ্যানোভার কাউন্টিতে গ্রেফতার হন, বিচারে অভিযুক্ত প্রমাণিত হলে তাকে শাস্তি ও জরিমানা করা হয়।
নীচে আমি আমার বক্তব্যের প্রেক্ষিতে জয়ের ক্রিমিনাল রেকর্ডের কিছু প্রমাণ তথ্য সহ তুলে ধরলাম।
এইসব তথ্য থেকে আরো জানা যায় যে জয় ১৯ মার্চ ২০০০ ভার্জিনিয়া ফেয়ারপ্যাক্স কাউন্টিতে জয় গ্রেফতার হন। গ্রেফতারের পর অভিযোগ প্রমাণ হলে তাকে বিভিন্ন মেয়াদে শাস্তি দেয়া হয়। ২৯ এপ্রিল ২০০১ ভার্জিনিয়ার রাপাহ্যানোক কাউন্টিতে এবং ২০ মে ২০০৪ আরলিংটন কাউন্টিতে আইন ভঙ্গের অপরাধে তাকে অভিযুক্ত করা হয়, শাস্তি দেয়া হয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়ের ৩০০ মিলিয়ন ডলার বা ২ হাজার ১শ কোটি টাকার উৎস আন্তর্জাতিকভাবে ইন্টারপোলের মাধ্যমে তদন্তের জন্য দুর্নীতি দমন কমিশনের কাছে আবেদন জানানো হয়েছে। গত ২৩ ডিসেম্বর ভলান্টিয়ার্স অব আমেরিকান কমিউনিটি (বাংলাদেশী) নামক একটি সংগঠন দুদক চেয়ারম্যান বরাবরে এই আবেদন জানিয়েছে। সংগঠনের সভাপতি আবুল হাশেম বুলবুল ও সেক্রেটারি কাজী সাকাওয়াত হোসেন বলেন, “যুক্তরাষ্ট্রে আওয়ামী লীগের সভানেত্রী শেখ হাসিনার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয় ও তার বোন সায়মা ওয়াজেদ (পুতুল), তার স্বামী খন্দকার এম হোসেন বিভিন্ন নামে-বেনামে ব্যবসা করে আসছেন।” তারা একাধিক ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও বিপুল সম্পত্তির মালিক। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর তার মা যখন প্রধানমন্ত্রী ছিলেন জয় তখন বিভিন্ন নামে-বেনামে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলেন। তার ব্যবসার মধ্যে টেক্সাসভিত্তিক ইনফোলিংক ইন্টারন্যাশনাল (নভেম্বর ’৯৮ থেকে মার্চ ২০০১) এবং নোভা বিডি ইন্টারন্যাশনাল এলএলসি (মে ’৯৮ থেকে আগস্ট ২০০১) এর সঙ্গে সমুদ্রতল দিয়ে ক্যাবল প্রজেক্টে নোভা বিডি ইন্টারন্যাশনালের মাধ্যমে সম্পর্ক গড়ে তোলেন এবং তার ঘনিষ্ঠ বন্ধু মাহবুবুর রহমানের সাথে সম্পৃক্ত হয়ে টাইকো কমিউনিকেশন ইউএসএর সঙ্গে যুক্ত হন।
২০০৫-এর মার্চে সজীব ওয়াজেদ জয় ‘জয় ওয়াজেদ কনসাল্টিং ও সিম গ্লোবাল সার্ভিস’ নামে আরও দুটি কোম্পানি প্রতিষ্ঠা করেন। জয় যুক্তরাষ্ট্রে কোনো চাকরি করেন না। তারপরেও জয় ২০০৬-এর ১২ মে তার নিজের নামে এই ঠিকানায় ৩৮১৭ বেলম্যানয়, ফলস চার্চ ভার্জিনিয়ায় ১০ লাখ ডলার দামের ১টি বাড়ি কিনেন। এর আগে যুক্তরাষ্ট্রে জয় ও তার স্ত্রীসহ যৌথ মালিকানাধীন আর একটি বাড়ি ৭ লাখ ৪৯ হাজার ডলার দিয়ে কিনেছিলেন। যুক্তরাষ্ট্রে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মেয়ে পুতুল ও তার স্বামীর ৩টি বাড়ি রয়েছে। সজীব ওয়াজেদ জয় এবং তার বোন সায়মা ওয়াজেদ (পুতুল) ও তার স্বামী খন্দকার এম হোসেনের যুক্তরাষ্ট্রে উলেখযোগ্য পরিমাণ সম্পদ রয়েছে যা সম্পূর্ণ অস্বাভাবিক ব্যবসায়ে লাভের পরিমাণ নামমাত্র দেখিয়ে পুতুল ও তার স্বামী মিলিয়ন মিলিয়ন ডলারের মালিক হয়েছেন এবং ফ্লোরিডাতে বিলাসবহুল ৩টি বাড়ি রয়েছে এই ঠিকানায় ৪৫৬ নর্থ বে পয়েন্ট ওয়ে, জ্যাকশন ভিল, ফ্লোরিডা। আর একটি বাড়ি ৮৪৫ ইয়র্কওয়ে, মেইটল্যান্ড, ফ্লোরিডা। আরেকটি বাড়ি ২০৬৫ ডব্লিউ ১১৯ এভিনিউ, মিরামার, ফ্লোরিডা। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়, তার বোন সায়মা ওয়াজেদ হোসেন (পুতুল) এবং তার স্বামী খন্দকার এম হোসেন-এর ব্যবসা বাণিজ্য ও সম্পদের দিকে তাকালে আলাদিনের চেরাগের মতই মনে হয়।
আওয়ামী লীগের প্রেসিডেন্ট শেখ হাসিনার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয় বেশ কয়েক বছর বিদেশ থাকার পর যখন দেশে ফিরে এসেছিলেন, বিমানবন্দরসহ সর্বত্র তাকে দেয়া হয়েছিল সংবর্ধনা। শেখ হাসিনার ইচ্ছা ছিল তার উত্তরসূরি হিসেবে তারপরে জয়ই হবেন দলের প্রধান। কিন্তু রাজনীতিবিদের কঠিন দায়িত্ব জয় কী পালন করতে পারবেন? আপাত দৃষ্টিতে মনে হচ্ছে তিনি যুক্তরাষ্টের জীবন যাপনে অভ্যস্ত এবং খুশি। যদিও বেশ কয়েকবারই তিনি সেখানে আইনের কঠিন আবদ্ধে ধরা পরেছেন। চলতি সপ্তাহে প্রকাশিত সাপ্তাহিক প্রোবে এ সংক্রান্ত একটি প্রতিবেদনের ট্রান্সক্রিয়েশন করেছেন ফয়সল আবদুলাহ ও সৈয়দ মাহ্মুদ জামান।
মাতাল হয়ে গাড়ি চালানো, অবৈধ অস্ত্র এবং জয়
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে জীবনযাপন জয়কে খুব একটা পরিবর্তন করতে পারেনি। তার চরিত্রিক বৈশিষ্ট্যের বেপরোয়া ভাব বার বার ফিরে এসেছে তার জীবনে। বিভিন্ন রেকর্ড খুঁজে দেখা গেছে তার বিরুদ্ধে বেশ কয়েকটি মামলাও হয়েছে।
তার বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগগুলোর মধ্যে রয়েছে মাতাল হয়ে গাড়ি চলানো, অতিরিক্ত গতিতে গাড়ি চালানো, রাডার ডিটেকশন ডিভাইসের অবৈধ ব্যবহার এমনকি অবৈধ অস্ত্র রাখা। এসব কৃতকর্মের জন্য তাকে কারাবাসও করতে হয়েছে, মোটা অংকের জরিমানাতো আছেই। শেখ হাসিনা যদি দলের ভবিষ্যৎ নেতা হিসেবে চিন্তা করে থাকেন, তবে জয়ের চেয়ে অনুপযুক্ত প্রার্থী তিনি পাবেন না।
জয় মূলত অরাজনৈতিক চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য নিয়ে চলেছেন। তিনি বাড়িতে জনসাধারণের ভিড় একেবারেই পছন্দ করেন না। তাছাড়া রাজনীতির প্রতি তার অপছন্দও তিনি প্রকাশ করেছেন। আগ্রহ বা কৌতূহল নিয়ে শেখ মুজিবের নাতির সঙ্গে দেখা করতে আসা অনেকের সঙ্গেই জয় অবজ্ঞাপূর্ণ আচরণ করেছেন।
যুক্তরাষ্ট্রে বসবাস করতে গিয়ে বাংলাদেশের সঙ্গে আপাত কোনও সম্পর্ক জয় রাখেননি। তার মার রাজনৈতিক দলটির প্রতিও তার কোনও আসক্তি ল করা যায়নি, এমনকি দেশে তার পরিবারের সঙ্গে বসবাস করার ইচ্ছাও তার ছিল না।
জয়ের জীবনে প্রেম ও বিয়ে
শেখ হাসিনার শাসনামলে (১৯৯৬-২০০১) স্কুল জীবনের এক বান্ধবীর সঙ্গে জয়ের বাগদান হয়। কনে ভারতের এক শিখ পরিবারের মেয়ে। শেখ হাসিনা সরকারি সফরের নামে লন্ডনে গিয়েছিলেন বিয়ের কথা পাকা করতে। সঙ্গে গিয়েছিল আত্মীয়-স্বজন ও পারিবারিক বন্ধু-বান্ধব। আরও সঙ্গে নিয়েছিলেন ঢাকার বিখ্যাত ফখরুদ্দিন বাবুর্চির সহকারীদের। তবে তার একমাত্র শর্ত ছিল মেয়েকে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করতে হবে। কিš’ সেই মেয়ে এতে অস্বীকৃতি জানায়। মানসিকভাবে বিপর্যস্ত শেখ হাসিনা সেদিনই সকল অনুষ্ঠান বাতিল করে দেন। তিনি সারাদিনই হোটেলের কে নিজেকে আবদ্ধ করে রাখেন এমনকি কারও সঙ্গে কথাও বলেননি। বিয়ের সেই অনুষ্ঠান আর হয়নি। কোনও অনুষ্ঠান না হওয়ায় অতিথিরা বিরিয়ানি না খেয়েই ঢাকায় ফিরে আসেন।
জয় বর্তমানে মার্কিন নাগরিক ক্রিস্টিন অ্যান ওভারমাইন ওরফে ক্রিস্টিনা ওয়াজেদের সঙ্গে বিয়ের বদ্ধনে আবদ্ধ। ২৬ অক্টোবর ২০০২ সালে যুক্তরাষ্ট্রে তাদের বিয়ে হয়। জনৈক রিচার্ড ডি লুমিসের সঙ্গে আগে ক্রিস্টিনের বিয়ে হয়েছিল বলে জানা গেছে। গুজব শোনা গিয়েছিল জয়-ক্রিস্টিনার তালাক আসন্ন। তবে সন্তান জন্মের কারণে সম্পর্কের টানাপোড়েন বা আলাদা হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা সম্ভবত এখন আর নেই।
গ্রেফতার এবং অভিযোসমুহ
১৪ জুন ১৯৯৮, টেক্সাসের টারান্ট কাউন্টিতে জয় গ্রেফতার হন। তার বিরুদ্ধে অবৈধ অস্ত্র রাখা ও মাতাল অবস্থায় গাড়ি চালানোর অভিযোগ আনা হয়। অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় আদালত তাকে ১২০ দিনের কারাবাস, ২৪ মাসের প্রোবেশন এবং ৫০০ ডলার জরিমানার আদেশ দেয়। ৬ ফেব্র“য়ারি ২০০৬, ভার্জিনিয়ার হ্যানোভার কাউন্টিতে গ্রেফতার হন জয়। তার বিরুদ্ধে বেপরোয়া গাড়িচালানো এবং বেআইনিভাবে রাডার ডিটেকটর সঙ্গে রাখার অভিযোগ আনা হয়। সাজা একদিনের হাজতবাস এবং জরিমানা। ১৯ মার্চ ২০০০, ভার্জিনিয়ার ফেয়ারপ্যাক্স কাউন্টিতে জয় গ্রেফতার হন। বিচারে অভিযোগ প্রমাণিত হলে আদালত তাকে ৩০ দিনের সাসপেন্ডেড কারাবাস সঙ্গে ১২ মাসের প্রোবেশন ও ৪০০ ডলার জরিমানা করা হয়। এছাড়া ২৯ এপ্রিল ২০০১, ভার্জিনিয়ার রাপাহ্যানোক কাউন্টিতে এবং ২০ মে ২০০৪, আরলিংটন কাউন্টিতে বেপরোয়াভাবে গাড়ি চলানোর দায়ে অভিযুক্ত হন জয়। প্রতিটি ক্ষেত্রেই আদালতের খরচও জয়কেই বহন করতে হয়েছে।
মা ক্ষমতায় আসার পরই জয়ের পোয়াবারো
আওয়ামী লীগ মতায় আসার পর মা যখন প্রধানমন্ত্রী হলেন, তখুনি জয় ব্যবসা শুরু করলেন। তার ব্যবসা ছিল টেক্সাস ভিত্তিক ইনফোলিংক ইন্টারন্যাশনাল (নভেম্বর ’৯৮ থেকে মার্চ ’০১) এবং নোভা বিডি ইন্টারন্যাশনাল এলএলসি (মে ’৯৮ থেকে আগস্ট ২০০১) এর সঙ্গে। সমুদ্রতল দিয়ে ক্যাবল প্রজেক্টে নোভা বিডি ইন্টারন্যাশনালের এর মাধ্যমে তার সম্পর্ক গড়ে উঠেছিল SEAMEWE-৪ -এর সঙ্গেও। কোনো এক মাহবুব রহমানকে সঙ্গী করে জয় টাইকো কম্যুনিকেশনের (ইউএসএ) সঙ্গেও যুক্ত ছিলেন। ২০০৫-এর মার্চে জয় ওয়াজেদ কনসাল্টিং ও সিম গোবাল সার্ভিস নামের আরও দুটো কম্পানি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। তবে তা হয়েছিল আওয়ামী লীগের মতা চলে যাওয়ার পর। মজার বিষয় হল, এ দুটো কোম্পানির বার্ষিক বিক্রয়ের পরিমাণ দেখানো হয়েছিল ৬১ হাজার ও ৩৫ হাজার ডলার। তারপরও জয় ২০০৬-এর ১২ মে তার নিজের নামে ৩৮১৭ বেল ম্যানর কোর্ট, ফলস চার্চ, ভার্জিনিয়া- এ ঠিকানায় ১০ লাখ ডলার দামের একটি বাড়ি কেনেন। এমনকি সেই বাড়ির মালিকানায় তার স্ত্রীর নাম ছিল না। তিনি ২ লাখ ডলার নগদ ও বাকি টাকা কিস্তিতে পরিশোধ করেন। বাড়ির আসল মূল্য লুকাতে এখানে চতুরতার পরিচয় দিয়েছেন জয়। তার আগে অবশ্য জয় তার স্ত্রীসহ যৌথ মালিকানায় ৭ লাখ ৪৯ হাজার ডলার দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে আরেকটি বাড়ি কিনেছিলেন।
ব্যবসা যেন এক কাপ চা
শেখ হাসিনা মতায় আসার পর জয়ের বোন সায়মা ওয়াজেদ হোসেনের (পুতুল) স্বামী খন্দকার এম হোসেনও যুক্তরাষ্ট্রে ব্যবসা শুরু করেন। তবে কয়েক বছরের মধ্যেই তিনি তার ব্যবসা গুটিয়ে নেন। তার ব্যবসাগুলোর মধ্যে উলেখযোগ্য ছিল, বাংলাদেশ মেটাল এন্ড পাইপস ট্রেডিং কর্পোরেশন, সোনালী ইনকর্পোরেশন, ডগস হোলসেল ইনক, আফসানা ইনক, এবং জাম্পি কর্পোরেশন। মনে হতে পারে, তাদের দুজনের (জয় ও খন্দকার এম হোসেন) কাছে ব্যবসাটা এক কাপ চায়ের মতোই। তবে দুজনের কেউই ব্যবসায় খুব একটা অর্থের মুখ দেখেননি। অথচ ব্যবসায় দুজন আর্থিক সঙ্কটে ভূগেছেন, এমনটাও শোনা যায়নি। হয়তো বা মায়ের আশীর্বাদেই।
যুক্তরাষ্ট্রে পুতুল ও তার স্বামীর তিনটি বাড়ি
সায়মা ওয়াজেদ হোসাইন, ডাক নাম পুতুল। শেখ হাসিনার কন্যা ও জয়ের ছোট বোন। স্বামী খন্দকার মাহাবুব হোসেনের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রে তার উলেখযোগ্য পরিমাণে সম্পদ রয়েছে। হুট করে নয়, বিভিন্ন সময়ে ধীরেসুস্থেই তারা একটি একটি করে সম্পদের মালিক বনেছেন। আর এ কারণেই সব সময় আলোচনা-সমালোচনার আড়ালে থেকেছেন তারা। ব্যবসায়ে লাভের পরিমাণ নামমাত্র দেখালেও পুতুল ও তার স্বামী খন্দকার মাহাবুব বাড়ি কিনেছেন লাখ ডলার দিয়ে। তাও একটি নয়, যুক্তরাষ্ট্রের ফোরিডাতে তাদের দুজনের নামে রয়েছে তিনটি বিলাসবহুল বাড়ি।
৪৫৬ নর্থ বে পয়েন্ট ওয়ে, জ্যাকসনভিল, ফোরিডা। এটি একটি ছোট বাসভবন। মালিকানা পুতুল ও তার স্বামী দুজনেরই। ২০০৫-এর ১ নভেম্বর ২ লাখ ৪৫ হাজার ডলার ব্যয়ে তারা এটি মেরিল এন্ড প্রিসসিলা কিংয়ের কাছ থেকে কিনেছিলেন। ৮৪৫ ইয়র্ক ওয়ে, মেইটল্যান্ড, ফোরিডা। এটিও একটি ছোট পরিবার ঘরানার বাড়ি। মালিক দুজনেই। মূল্য ৩ লাখ ১১ হাজার ডলার। ২০৬৫ ডবলিউ ১১৯ এভিনিউ, মিরামার, ফোরিডা। এ ভবনটিরও মালিক স্বামী-স্ত্রী। কেনা হয়েছিল ’৯৮’র ২৮ অক্টোবর। বাড়িটির দাম তখন ছিল ১ লাখ ৫৪ হাজার ৩শ ডলার। ছবিতে সজিব ওয়াজেদ জয়ের Linkedin প্রফাইলের আংশিক অংশ দেওয়া আছে। প্রোফাইল থেকে তার উল্লেখযোগ্য বিবরন পাওয়া যাচ্ছে। উনি নিজেকে আইটি বিষয়ে বিশেষভাবে জানা মানুষ হিসেবে পরিচয় দেন। তবে তারচেয়েও গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার উনি বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর আইটি বিষয়ক উপদেষ্টা। এখন দেখা যাক আইটিতে উনার অবদান বা অর্জন কতটুকু।
উনি যেসব বিশ্ববিদ্যালয়ে আইটি বিষয়ে পড়েছেন এগুলো তেমন স্বনামধন্য কোন বিশ্ববিদ্যালয় না। তারপরেও তার প্রফেশনাল প্রোফাইলে আছে কম্পিউটার ল্যাব ম্যানেজার। এরকম যোগ্যতা সম্পন্ন কয়েক ডজন ছেলে বাংলাদেশেও আজকাল পথে ঘাটেই পাওয়া যায়। আরেকটি পদবির কথা লেখা আছে কাস্টমার সার্ভিস ম্যানেজার। তিনি বাকি যে দুটি প্রতিষ্ঠানের কথা বলেছেন তার মধ্যে দ্বিতীয়টি খুজে পেলাম না। প্রথম প্রতিষ্ঠানটির ও কোন ওয়েবসাইট নেই। তবে বর্তমানে ওয়াজেদ কনসাল্টিং ইন্ক নামের আকেটি প্রতিষ্ঠানের প্রেসিডেন্ট হিসেবে তার পদবি দেয়া আছে। এই প্রতিষ্ঠানেরও কোন ওয়েবসাইট নেই। বিজনেস কনসাল্টিং ফার্ম অথচ তাদের কাজেরও কোন সুনির্দিষ্ট বিবরন নেই।
একটি পত্রিকার খবর.. “বিশিষ্ট আইসিটি বিজ্ঞানী প্রধানমন্ত্রীর ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয় দেশের তথ্য প্রযুক্তি কার্যক্রমের অগ্রগতির বিষয়ে খোঁজ-খবর নিয়ে এসব বিষয়ে পরামর্শ দিচ্ছেন। তিনি ইতিমধ্যে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের এ-টুআই কর্মসূচি, টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের ল্যাপটপসহ ভিওআইপি উন্মুক্তকরণ, তথ্য বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের হাই-টেক পার্কসহ আইসিটি উন্নয়নের পদক্ষেপের বিষয়ে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী ও কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী রাজিউদ্দিন আহমেদ টেলিফোন শিল্প সংস্থার উদ্যোগে যেসব ল্যাপটপ তৈরি হবে এর স্যাম্পলসহ সজিব ওয়াজেদ জয়ের সঙ্গে গণভবনে বৈঠক করেছেন। গত ১৪ ডিসেম্বর জয় তথ্য,বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী স্থপতি ইয়াফেস ওসমানকে নিয়ে শেরোবাংলাস্থ বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিল অফিস পরিদর্শন করেন। তিনি কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করে আইসিটি খাতের উন্নয়ন বিষয়ে কথা বলেন।
বাংলাদেশের তথ্যপ্রযুক্তি পলিসি নিয়ে কোন প্রোটোকলে উনি পরামর্শ দেন? উত্তর উনি বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর আইটি বিষয়ক উপদেষ্টা। তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়ে ডিগ্রি যদি উপদেষ্টা হওয়ার যোগ্যতা হয় আমার মনে হয় এমন একাধিক বা অনেকে আছেন যারা এই খাতে প্রবাসে সম্মানের সঙ্গে কাজ করছেন – তারা তো এই সুযোগ পাচ্ছেন না। আর যদি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সন্তান হওয়ার কারনে তিনি পরামর্শক হওয়ার যোগ্যতা অর্জন করে থাকেন তাহলে বলব এখানে সরকারের ক্রেডিবিলিটি ক্ষুন্ন হচ্ছে।
আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ছেলে যে বিজ্ঞানী – তা তো জানা ছিলো না! আবারও প্রশ্ন,
• কিন্তু জয় কীভাবে বিজ্ঞানী?
• খ্যাতনামা কোনো জার্নালে উনি লিখেন না-কি?
• মৌলিক কোন বিষয়ে কোনো লেখা বা প্রকাশনা আছে কি জয়ের?
• উনি কি এম এস করেছেন?
• উনি কি কিছু আবিষ্কার করেছেন?
আমেরিকায় জয়ের আরো কিছু ক্রিমিনাল রেকর্ডের প্রমান তথ্য ও প্রমাণ সহঃ
২০০৫-এর মার্চে জয় ওয়াজেদ কনসাল্টিং ও সিম গোবাল সার্ভিস নামের আরও দুটো কোম্পানি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। মজার বিষয় হল, এ দুটো কোম্পানির বার্ষিক বিক্রয়ের পরিমাণ দেখানো হয়েছিল ৬১ হাজার ও ৩৫ হাজার ডলার। এইসব তথ্য ছাড়াও বাংলাদেশের প্রথম নিজস্ব ল্যাপটপ “দোয়েল” কেলেংকারীতেও জয়ের প্রচ্ছন্ন ভূমিকা রয়েছে। এই ল্যাপটপের জন্য সরকার প্রায় ২০০ কোটি টাকা ভর্তুকি দিয়েছিলো। এই টাকা অনুমোদন করিয়েই দিয়েছিলো সজীব ওয়াজেদ জয়। আপনারা এরই মধ্যে দোয়েল ল্যাপটপের হরিলুটের সকল তথ্য জানেন। সামনে দোয়েল ল্যাপটপ নিয়ে একটি বড় লেখাও আসবে। চট্রগ্রাম-১১ এর এম্পির ছেলে নাজমুল চৌধুরী শারুনের মাধ্যমে সংঘঠিত হয়েছে বাংলাদেশের সবচাইতে বড় এই কেলেংকারীর ঘটনা। এই লেখার পরবর্তী পর্বে আসবে সেসব ঘটনার বাকী অংশ।
উপরে আপনারা দেখেছেন যে সজীব ওয়াজেদ জয় আমেরিকাতে কিভাবে নানাবিধ অপরাধ কার্যক্রমে জড়িয়ে পড়ে দোষী সাব্যাস্ত হয়েছে এবং শাস্তি পেয়েছে। এই ক্রিমিনাল লোকটিই যখন বাংলাদেশে এসে আমাদের প্রাণ প্রিয় নেত্রী খালেদা জিয়া ও আমাদের নেতা তারেক রহমানকে নিয়ে বেয়াদপের মত কথা বলে ঔদ্ধত্য নিয়ে তখন আমরা বিষ্ময়ে হতবাক হয়ে যাই। একজন ক্রিমিনালের এত বড় গলা কোন সাহসে সেটি আমরা খুঁজে পাইনা কোনোভাবেই। খুনী হাসিনা তার বদমাইশ, ক্রিমিনাল ছেলেকে লেলিয়ে দিয়ে এই বাংলাদেশকে নতুন এক অনলে সঁপে দিতে চায়। আর সে লক্ষ্যেই এই ক্রিমিনাল টা কাজ করে যাচ্ছে দিনের পর দিন। সামনের পর্বে আপনাদের আরো নানাবিধ তথ্যের সামনে হাজির করে দেখিয়ে দেব যে এই সজীব ওয়াজেদ জয় আসলে বাংলাদেশকে কোন পথে নিয়ে যেতে চাইছে।