পুরোনো ডকুমেন্ট গুছাইতে গিয়ে ফাইলটা পাইলাম। ২০০৫ সালের মে মাসে যুবলীগ নেতা আবুল কালাম আজাদ সুমনকে টর্চার করে মেরে ফেলছিলো ৱ্যাব। এই মে মাসের ৩১ তারিখ ১৩ বছর হবে! ঐ কেইসটা ইনভেস্টিগেট করছিলাম আমি আর হেনরিক। ছেলের হত্যার বিচার চেয়ে মামলাও করছিলেন সুমনের মা। বিচার হয় নাই, হবেও না।
এই পোস্টারে যেমন বলছে, বিএনপি-জামাত জোট সরকারের আমলে আসলেই ক্রসফায়ারের নামে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের হত্যা করা হইতো। এখন হত্যা করা হয় বিএনপি, যুবদল, ছাত্রদলের নেতাকর্মীদের। এইগুলারও বিচার হবেনা। খালেদা জিয়া আর তৎপুত্র তারেক রহমান আবার ক্ষমতায় আসলে হয়তো পোলাও খাবেন এদের শোকে।
বাংলাদেশের ডি ফ্যাকটো মহারানী শেখ হাসিনা কয়দিন আগে যেমন জানাইছিলেন যে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সদস্যরা দুপুরে ভাত খাইতে পারতোনা এই দুঃখে তিনিও বেশ কিছুদিন ভাত না খেয়ে ছিলেন। দুপুরবেলা ভাত না খাওয়াটা আসলে খুবই ভাল, উনি এই হেলদি প্র্যাকটিসটা কন্টিনিউ করলেই পারতেন।
যাই হোক, দুপুরবেলা ভাত খাওয়া সংক্রান্ত আরেকটা গল্প দিয়ে শেষ করি।
এই গল্পটা আরেক সুমনের। সুমন আহমদ মজুমদার — আহসানউল্লাহ মাস্টার এসাসিনেশনের স্বাক্ষী ছিলো সুমন। ওরেও তুলে নিয়ে টর্চার করে মেরে ফেলছিলো ৱ্যাব, ড্রীল মেশিন দিয়ে হাঁটু ফুটা করে দিছিলো।
যথারীতি ঐ কেইসটাও ইনভেস্টিগেট করতে ওদের বাসায় গেছিলাম আমি আর হেনরিক। উইটনেস ইন্টারভিউ রেকর্ড করতে, করতে দুপুরবেলা খাওয়ার সময় হয়ে গেলো। সুমনের মা পাতে তুলে ভাত দিলেন, ইলিশ মাছ দিলেন। আমার খুবই প্রিয় মাছ, তাই গোগ্রাসে খাইতেছিলাম। উনি হেসে, হেসে আরও কয়টা টুকরা মাছ দিলেন: “আমার সুমনটাও ইলিশ মাছ খুব পছন্দ করতো বাবা। তোমার মতোই খাইতে পছন্দ করতো।”
এইটা আমি ভুলতে পারিনা — ইলিশ মাছ দিয়ে ভাত খাইতে গেলেই মনে পড়ে।
বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর যে সদস্যরা ডেপুটেশনে ৱ্যাবে আসেন, টর্চার করে মানুষ খুন করেন তাদের কি ভাত-রুটি-পিজ্জা খাইতে সমস্যা হয় না?