মুরগী থিওরি অনুযায়ী ‘জিন্দাবাদ’ একটা পাকিস্তানী ছাগু শব্দ। তবে যখনই আপনি মুরগীদের মনে করিয়ে দেবেন যে, তোমরাও তো পাকিস্তানী ছাগুদের ‘আওয়ামী’ শব্দটা তোমাদের দলের নামের মধ্যে বহন করে বেড়াচ্ছ, ওটা কেন বদলাও না? তখনই দেখবেন এদের মাথায় শর্ট সার্কিট হয়ে যাবে। ভরভর করে বলতে শুরু করবে, ‘আওয়ামী’ তো উর্দু শব্দ, পাকিস্তানের চেয়ে তো ভারতে বেশি লোক উর্দুতে কথা বলে… ব্লা ব্লা ব্লা।
এবার আবার মুরগীদের জিজ্ঞেস করুন, বৃটিশদের বিরুদ্ধে সবচেয়ে বেশি উচ্চারিত স্লোগান ‘ইনকিলাব জিন্দাবাদ’ কে দিয়েছিলো? আপনি ১০০% নিশ্চিত থাকেন এরা উত্তর দেবে ‘জিন্নাহ’। এটা আমি নিজে আমার সকল পরিচিত মুরগীদের প্রশ্ন করে দেখেছি, সবাই ‘খুদ-কুঁড়া’ টেস্টে সাফল্যের সাথে পাশ করেছে।
যাই হোক, বাদ দেন ভগত সিং এর কথা। যাদের বয়স ৫০ এর বেশি তারা নিশ্চই স্মরণ করতে পারবেন ১৯৭৫ সাল পর্যন্ত মুজিবের নামে কী শ্লোগান দেয়া হত। যদি স্মরণ না করতে পারেন, তাহলে নীচের লিংকে দেয়া ভিডিওতে ১ মিনিট ১৭ সেকেন্ড থেকে দেখুন।
সেদিন সাভারে জাতীয় স্মৃতিসৌধে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের তিনটি ছাত্র সংগঠন উপস্থিত ছিল। ইংরেজীতে ভুট্টো বিরোধী প্ল্যাকার্ড নিয়ে “কিলার ভুট্টো, গো ব্যাক” এবং “লং লিভ শেখ মুজিব” শ্লোগান দিয়েছিল ছাত্র ইউনিয়ন; মুজিববাদী ছাত্রলীগ শ্লোগান দিয়েছিল, “বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব জিন্দাবাদ জিন্দাবাদ” এবং জাসদ ছাত্রলীগ শ্লোগান দিয়েছিল, “জয় বাংলা জয় বাংলা”।
উল্লেখ্য, ‘জয় বাংলা’ শ্লোগানটার জন্মদাতার নাম মরহুম আফতাব আহমাদ। ১৯৬৯ সালে তিনি সিরাজুল আলম খান প্রতিষ্ঠিত ‘স্বাধীন বাংলা নিউক্লিয়াস’ এর মুখপত্ররূপে প্রকাশিতব্য হাতে লেখা পত্রিকার নাম হিসেবে এটি প্রস্তাব করেন এবং ‘জয় বাংলা’ নামে সেই হাতে লেখা পত্রিকাও তিনিই বের করেছিলেন। পরবর্তীতে আফতাব আহমাদ জাসদ হয়ে বিএনপিপন্থী শিক্ষক রাজনীতি করতেন। উনি যখন জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর তখন আমি শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ছিলাম। উনাকে জিজ্ঞেস করেছিলাম, “এখন কেন আপনি নিজেই আপনার তৈরী শ্লোগান দেন না?”। উনি উত্তর দিয়েছিলেন, “তখন বাংলাদেশের জয় প্রয়োজন ছিল, জয় অর্জিত হয়েছে, এখন বাংলাদেশের টিকে থাকার শ্লোগান দিতে হবে, তাই আমি এখন বাংলাদেশ জিন্দাবাদ বলি”।