আমার প্রিয় সংগঠন যুক্তরাজ্য যুবদল নিয়ে লিখার শুরুতে ধন্যবাদ জানাই মুজিবুর রহমান মুজিব, মরহুম মদরিছ আলী বাদশা, ময়ুর মিয়া, আব্দুল খালিক, শেখ লাকী, তোফায়েল বাছিত তপু, সাদিক মিয়া, দেওয়ান মোকাদ্দেম চৌধুরী নেয়াজ, এনামুল হক লিটন, নাসিম আহমদ চৌধুরী, শেখ আলী আহমদ, আবুল হোসেন, তাজ উদ্দিন সহ সাবেক যুবদলের নেতৃবৃন্দ যারা যুক্তরাজ্য যুবদলকে সুপ্রতিষ্ঠিত করেছেন।
বন্ধুগণ, আমি নিজেও যুক্তরাজ্য যুবদলের দ্বায়িত্বে ছিলাম দীর্ঘদিন। দ্বায়িত্বে থাকাকালীন সময়ে সাধ্যমত কাজ করার চেষ্টা করেছি। আমাদের সময় দেশের প্রতিটি রাজনৈতিক ইসুতে যুক্তরাজ্য যুবদল এবং যুক্তরাজ্য যুবদলের জোনাল কমিটি গুলো কাজ করেছে জোড়ালো ভাবে। আওয়ামীলীগের অন্যায়ের বিরুদ্ধে যুক্তরাজ্য যুবদলের অবস্থান ছিল সুদৃঢ়। শেখ হাসিনার যুক্তরাজ্যে আগমণে যুক্তরাজ্য যুবদলের নেতৃত্বে ডেমোস্ট্রেশন হয়েছে বহুবার।
আমাদের সময়ে আমরা যুক্তরাজ্যে যুবদলের ৩৯টি জোনাল কমিটি করতে সক্ষম হয়েছিলাম এবং আমরা কোন জোনাল কমিটি লন্ডনে বসে দেইনি। সুদূর সোয়ানসী, কার্ডিফ থেকে শুরু করে নিউকাসল, সান্ডার ল্যান্ড পর্যন্ত স্বশরীরে উপস্থিত হয়ে, মিটিং করে কমিটি দিয়েছি। তাই দলকে শক্তিশালী করতে এবং যোগ্য কর্মীদের হাতে দলের দ্বায়ীত্ব তুলে দিতে যুক্তরাজ্যের প্রতিটি শহরে আমাকে যেতে হয়েছে বহুবার। আমাদের সময় জোনাল কমিটির বিপরীতে কোন পাল্টা কমিটি এসেছে এইরূপ কোন নজির নেই। আমরা যুক্তরাজ্য যুবদলের সাবেক নেতৃবৃন্দকে যথাযথ মূল্যায়ন এবং সম্মান দেয়ার চেষ্টা করেছি। জোনাল কমিটি করার সময়ে, ঐ জোনের বিএনপির সভাপতি – সাধারণ সম্পাদকের পরামর্শ নিয়েছি এবং উনাদেরকে সম্মান দেয়ার চেষ্টা করেছি।
আমি এখন বর্তমান যুক্তরাজ্য যুবদল নিয়ে কিছু বলতে চাই-
বর্তমানে আপনারা যারা যুক্তরাজ্য যুবদলের দ্বায়ীত্বে আছেন আপনরা একটি শক্তিশালী যুবদল তৈরি পেয়েছেন। কিন্তু, দুঃখজনক হলেও সত্য, যাদের কঠোর পরিশ্রমের মাধ্যমে আপনরা এত বড় একটি সুশৃঙ্খল যুবদল উপহার পেলেন তাদেরকে মূল্যায়নতো দূরের কথা, যুবদলের অনুষ্ঠানে তাদেরকে আপনারা দাওয়াতও করতে চান না।
আপনারা লন্ডনে বসে অনেক জোনাল কমিটি ঘোষণা দিচ্ছেন, তাই অনেক ক্ষেত্রে যোগ্য নেতৃত্ব না আসার সম্ভাবনাই বেশী। অনেক জোনাল কমিটির নেতৃবৃন্দ আমাদের কাছে নালিশ করছেন, কিন্তু আমরা কিছু বলতে পারি না।
গত ১১ ফেব্রুয়ারী মঙ্গলবার, যুক্তরাজ্য যুবদলের একটি অনুষ্ঠানে আমাদের নেত্রী, আমাদের মা, দেশনেত্রী, দলের চেয়ারপারসন মা বেগম খালেদা জিয়াকে নিয়ে এমন নাটক করলেন, যার পরিনামে দেশ-বিদেশ থেকে শহীদ জিয়ার সৈনিকেরা আপনাদেরকে এবং সাথে সাথে আমার প্রিয় সংগঠন যুক্তরাজ্য যুবদলকে ধিক্কার জানিয়েছে। বন্ধুগণ আমাদের নেত্রী, আমাদের মাকে নিয়ে নাটক করার সাহস আসল কোথা থেকে?
২৬ ফেব্রুয়ারি বুধবার সকালে ঘুম থেকে উঠে ফেসবুক খুলতেই দেখলাম যুক্তরাজ্য যুবদলের পোষ্টে ফেসবুক সয়লাব।খেয়াল করে দেখলাম লন্ডন মহানগর যুবদল, লন্ডন সিটি যুবদল, সেন্ট্রাল
লন্ডন যুবদল এবং ইস্ট লন্ডন যুবদলের কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে। তবে দুঃখজনক হল, প্রত্যেকটি কমিটি ভিন্ন ভিন্ন যুবদল কর্মীদের দিয়ে দুইবার করে এসেছে। খবর নিয়ে জানলাম যুক্তরাজ্য যুবদলের অবস্থা খুবই উত্তপ্ত, গ্রুপিং নাকি খুব চাঙ্গা, যে কোন সময় যে কোন কিছু ঘটে যেতে পারে!
বন্ধুগণ, কমিটি দিবেন ভাল কথা, কিন্তু একসাথে চারটি কমিটি কেন? একটি কমিটি মিটিং ডাকবে, নেতা-কর্মীরা বক্তব্য দিবে, আপনরা যাচাই বাচাই করে নেতা নির্ধারণ করে আহ্বায়ক একটি কমিটি করবেন। পরবর্তীকালে আহ্বায়ক কমিটির এক্টিভিটি দেখে পূর্ণাঙ্গ কমিটি দিবেন। এখানে আহ্বায়ক কমিটি না করে, কোন মিটিং ছাড়া একসাথে চারটি কমিটি পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণার যৌক্তিকতা বুঝলাম না? আর আপনরা যারা পাল্টা কমিটি দিয়েছেন, আপনারাও এই ভাবে পাল্টা কমিটি না দিয়ে যুক্তরাজ্য বিএনপির সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক সহ সিনিয়র নেতৃবৃন্দ এবং যুক্তরাজ্য যুবদলের সাবেক নেতৃবৃন্দকে বলে আলোচনার মাধ্যমে সমস্যার সমাধান করতে পারতেন।
বন্ধুগণ, মনে রাখবেন দেশ এবং দল ক্রান্তিকাল আতিক্রম করছে। তাই এখন আমাদের বিভাজন নয়, দেশ এবং দলকে রক্ষায় ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। আমি মনেকরি যুক্তরাজ্য বিএনপির সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক সহ সিনিয়র নেতৃবৃন্দ এবং যুক্তরাজ্য যুবদলের সাবেক নেতৃবৃন্দকে নিয়ে আলোচনার মাধ্যমে বর্তমান এই সমস্যার সমাধান সম্ভব।
যুক্তরাজ্য যুবদলের এই দুরাবস্থা দেখে হৃৎপিন্ডে রক্তক্ষরণ শুরু হয়েছে। মনে পরে সেই সময়ে কথা, ২০০৮ থেকে ২০১৩ সাল। নিজ পরিবার ও সন্তানদেরকে সময় না দিয়ে, যুক্তরাজ্য যুবদলের জন্য কাজ করেছি, যুক্তরাজ্যের মাটিতে যুবদলকে সুপ্রতিষ্ঠিত করেছি। তাই যুক্তরাজ্য যুবদলের ভাল দেখলে মন আনন্দে ভরে উঠে এবং যুবদলের বিভাজনে মন কাঁদে। তাই যুক্তরাজ্য যুবদল নিয়ে কিছু লিখলাম।
আমাদের সময়ে যুক্তরাজ্য যুবদলের জন্য লন্ডনে যারা ৯৯৯ সার্ভিসের মত কাজ করেছেন এবং জোনাল কমিটির অনেকেও একই ভাবে কাজ করেছেন তাদের মধ্যে কিছু নাম লিখছি- টিপু আহমদ, তাজ উদ্দিন, মাহমবুবুল আলম লাহিন, মুনিম ঈনাম, হ্যাভেন খান, খিজির আহমেদ, জিয়াউল হোক জিয়া, এজে লিমন, সাইফ উদ্দিন, ওয়াসিম উদ্দিন মানিক, জাকির খান, বাবর চৌধুরী, ওয়াদুল হক এমাদ, আব্দুস সোবহান, কবির মিয়া, তারেক আহমেদ. লায়েক মুস্তাফা, লুবেক চৌধুরী, শেখ মনসুর, রাসেল আলী, সেবুল মিয়া, আব্দুল মতিন, দেলোয়ার হুসেন শাহীন, সাব্বির ময়না, সিব্বির সুমন, আব্দুস সহিদ, জিতু মিয়া, শামীম আহমদ, আব্দুল হামিদ সুমেদ, আব্দুল ওয়াহিদ আলমগীর, আলী আহমদ, ইকবাল হোসেন, মল্লিক সহিদ, আব্দুল ওয়াহিদ, চাঁন মিয়া, ইসলাম উদ্দিন জনি, আলী আহমদ, মোঃ মিজান, শাহ্ তাজুল ইসলাম, রুহেল মিয়া, এনায়েত চৌধুরী, মাসুদ আহমদ, আতিকুর রহমান লিটন, সফর আলী সেবুল, জাকির হোসেন, তুফায়েল চৌধুরী রাজু, কায়সারুল ইসলাম সুমন, জালাল উদ্দিন, সমির আলী, গুলজার আহমদ, ফয়সল, সাফায়েত কবির পার্ভেজ, কয়ছর আলী শাহিন, মুদাচ্ছির খাঁন, রাসেল আহমদ, মজনু মিয়া, বুরহান উদ্দিন, আব্দুল কাইয়ুম, মেহরাব উদ্দিন, সুহেল রানা, মুমিনুর মুরাদ, মোঃ আনিস, জয়নাল কোরেশী, জিল্লুর চৌধুরী, জুবায়ের চৌধুরী, বখতিয়ার খাঁন, আতর আলী, মোঃ মিজান, সুয়েব আহমদ সহ অনেকে আপনরা আমাদের সাথে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করেছেন এবং আপনাদের কঠোর পরিশ্রমের ফসল হিসেবে যুক্তরাজ্য যুবদল একটি শক্তিশালী সংগঠনে রূপ নিয়ে ছিল। বর্তমান যুবদল আপনাদের অবদানের কথা ভুলে গেলেও, আমার রাজনৈতিক জীবনে আমি আপনাদের কথা ভুলতে পারনা। বর্তমান যুবদলের এই দুরাবস্থা নিরেসনে আপনারা এগিয়ে আসা উচিৎ বলে আমি মনে করি।
সবাইকে আন্তরিক ধন্যবাদ।
– আব্দুল বাছিত বাদশা
সাবেক সাধারণ সম্পাদক, যুক্তরাজ্য যুবদল