নিজস্ব প্রতিবেদক: কাতার থেকে ১০০ কোটি টাকার বেশি অর্থ পাচার করে আরব আমিরাতে নিজের একাউন্টে নিতে গিয়ে শারজাহ পুলিশের তদন্তের জালে আটকা পড়েছেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মেয়ের জামাই খন্দকার মাশরুর হোসাইন মিতু। ইতোমধ্যে তার পাসপোর্ট আটক করে নজরবন্দী করে রাখা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে মানি লন্ডারিং সহ নানাবিধ অপরাধের তদন্ত চলছে। শারজাহর কেন্দ্রস্থলে নাসের টাওয়ারের ৩০০৯ নম্বর এপার্টমেন্টের মিতুর বাসা আজ তল্লাশি করছে পুলিশ। সূত্র জানিয়েছে, তদন্তে অনেক কিছু বের হচ্ছে।
ফরিদপুরের কুখ্যাত নুরু রাজাকারের নাতি ও আ’লীগের সাবেক মন্ত্রী খন্দকার মোশাররফ হোসেনের পুত্রখন্দকার মাসরুর হোসেন মিতু বেশ কয়েক বছর যাবৎ স্ত্রী পুতুল সহ আরব আমিরাতে বসবাস করছেন। মুলত বাংলাদেশের বিভিন্ন প্রজেক্ট থেকে দুর্নীতিলব্ধ এবং শেখ হাসিনা ও পুতুলের কমিশন বাবদ প্রাপ্ত মিলিয়ন মিলিয়ন ডলার পাচার করে এনে ব্যাংকে রাখা, বিভিন্ন ব্যবসায় লগ্নি করা মিতুর কাজ। তার ব্যবসার মধ্যে রয়েছে হুন্ডি ব্যবসা, বিভিন্ন দেশ থেকে কালো টাকা আদান-প্রদান।
গত মাসে চীনা একটি মাধ্যমে ১০০ কোটি টাকার বেশি একটি ফান্ড মাসরুরের একাউন্টে আসে কাতার থেকে। আবুধাবী কমার্শিয়াল ব্যাংকের (ADCB) শারজাহ শাখায় অবস্থিত মিতুর ব্যক্তিগত একাউন্টে এই টাকা আসে। কাতার নিয়ে চলমান সংকটের ফলে আরব আমিরাতের সাথে দেশটির ব্যবসা বানিজ্য সম্পূর্ণভাবে নিষিদ্ধ। আর সেই কাতার থেকেই মোটা অংকের টাকা অনলাইন ট্রানজেকশনের মাধ্যমে আসে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর মেয়ের জামাই খন্দকার মাসরুর হোসের পারসোনাল একাউন্টে। সন্দেহজনক এই লেনদেন নিয়ে তদন্ত শুরু করে শারজাহর AML ইউনিট। সেখান থেকে বিষয়টি শারজাহ পুলিশের কাছে আসে। মিতুর বাংলাদেশী পাসপোর্ট আটক করে তার পালানো আটকে দেয় পুলিশ।
আরব আমিরাতের ৭টি আমিরাতের মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ এই শারজাহ আমিরাতে চলে নিজস্ব আইন কানুন। এখানে পবিত্র কোরআনের আইন কার্যকর। তাছাড়া ২০১৮ সালে নতুন এন্টি মানি লন্ডারিং আইন (AML) কার্যকর করার পর থেকে দেশটিতে মানি লন্ডারিং ড্রাইভ জোরদার হয়। সেই বিপদেই পড়েছে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর মেয়ের জামাই। সূত্র জানায় যেভাবে আটকেছে পুতুলের জামাই, এখান থেকে বের হতে পারবে না। উল্টো তদন্তে আরো অনেক জটিল সমস্যায় আটকে যাওয়ার আশংকা রয়েছে।
মেয়ের জামাইকে ছাড়ানোর উদ্দেশ্যে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা হঠাৎ আরব আমিরাতে যাচ্ছেন ১১ জানুয়ারী। কিন্তু শারজাহ কড়া আইন কানুনের উপরে তদবীর চালাতে গেলে ফেঁসে যেতে পারে মিতু। একেতো শারজাহর কাসেমী শাসক খুব কড়া এবং কোরআনী আইন, দ্বিতীয়ত শারজাহ শাসকের সাথে দুবাইর শাসকের সম্পর্ক ভালো না। ফলে শেখ হাসিনা দুবাই শাসকের মাধ্যমে তদবীর চালাতে গেলে জামাইর কপালে বিপদ বাড়তে পারে। বাড়াবাড়ি করতে গেলে চরম দন্ড পেতে পারে- দেশটির সিস্টেম অনুযায়ী হয়ত শুট আউট বা ইনজেকশন দিয়ে ডিজেবল করে ছেড়ে দিতে পারে। এরেস্ট হয়ে গেলেই খেলা শেষ।
(আজকের কথা)
মানি লন্ডারিংয়ের অভিযোগে হাসিনার মেয়ের জামাই মিতুর পাসপোর্ট আটক: বাসা তল্লাশি