দুর্নীতির বিষয়ে তথ্য জানাতে গত ২৭ জুলাই টোল ফ্রি ওয়ান-জিরো-সিক্স (১০৬) নম্বরটি চালু করে দুর্নীতি দমন কমিশন। এই হটলাইনে তথ্যদাতাদের নাম ও পরিচয় সম্পূর্ণ গোপন রেখে তারা তথ্য নেয়। দুদক কলসেন্টারে মোট ২০ জন কর্মকর্তা কাজ করেন। ছুটির দিন ছাড়া সপ্তাহের অন্যদিনগুলোতে সকাল নয়টা থেকে বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত দুদক কর্মকর্তারা বিভিন্নজনের কাছ থেকে ফোন অভিযোগ নেন। দুর্নীতির অভিযোগ জানতে হটলাইন চালুর পর থেকে গত তিন মাসে (নভেম্বর পর্যন্ত) আড়াই লাখেরও বেশি ফোন পেয়েছে দুদক। তবে সব অভিযোগ দুদক আইনে আমলযোগ্য নয়। এই তিন মাসে ছয়শর মতো অভিযোগ আমলে নিয়েছে দুদক।
যেসব অভিযোগ আমলে নেয়া হয়েছে তার মধ্যে এ পর্যন্ত ২৫টি টি অভিযোগ অনুসন্ধানের জন্য কাজ শুরু করেছে দুদক। আর প্রায় ৫৭টি অভিযোগ পাঠানো হয়েছে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে। বাকিগুলো নিয়ে প্রাথমিক কার্যক্রম শুরু হয়েছে। দুদক সচিব শামসুল আরেফিন জানান, গড়ে প্রতিদিন দুদকের হটলাইনে এক হাজারের মতো ফোন পায় দুদক। এ পর্যন্ত দুদক ৬০০ অভিযোগ বিবেচনায় নিয়ে লিখিতভাবে যাচাই বাছাই সেলের কাছে পাঠিয়েছে। দুদক আইনের আওতায় সরকারি অফিস ও প্রতিষ্ঠানগুলোতে ঘুষ দেয়া বা নেয়া, রাষ্ট্রীয় সম্পদ ও অর্থের অবৈধ ব্যবহার, রাষ্ট্রীয় অর্থ আত্মসাৎ, অবৈধ উপায়ে সম্পদ অর্জন, মানি লন্ডারিং ও ব্যাংক জালিয়াতি ইত্যাদি বিষয় নিয়ে কাজ করবে সংস্থাটি। অর্থাৎ এসব বিষয়ে অভিযোগ জানালে দুদক ব্যবস্থা নিতে পারে। তবে হটলাইনে ভূমি দখল, মাদক বিক্রি, এমনকি গৃহকর্মী নির্যাতন, স্বামী–স্ত্রীর কলহ, দলিল জাল, জমি দখল নিয়েও অভিযোগ আসছে।
এদিকে শেখ হাসিনা এবং তার পরিবারের সদস্য এবং আওয়ামী লীগের নেতা মন্ত্রীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানিয়ে ফোন এলে কোনো কর্মকর্তাই এখন আর অভিযোগ নিতে চাননা। দুদকের একটি সূত্র বলেছে, সজীব ওয়াজেদ জয় এবং শেখ রেহানার বিরুদ্ধে কয়েকটি অভিযোগ লিখিতভাবে নিয়ে যাচাই বাছাই সেলের কাছে পাঠানোর পর এটি উচ্চপর্যায়ে জানাজানি হয়ে যায়। সূত্রের দাবি, এরপরই শেখ হাসিনা পরিবারের সদস্যদের ব্যাপারে অভিযোগ গ্রহণ না করার ব্যাপারে অলিখিত নির্দেশ জারি করা হয়। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দুদকের একজন উর্ধতন কর্মকর্তা বলেছেন, তারা সকল অভিযোগ গ্রহণ করছেন এবং যাচাই বাছাই শেষে যথানিয়মে তদন্তে যাচ্ছেন। শেখ হাসিনা পরিবারের বিরুদ্ধে অভিযোগের ব্যাপারে তবে তিনি কোনো মন্তব্য করতে অনীহা প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, টোল ফ্রি ফোন চালু করে দুদক বিপদে পড়েছে। কারণ সকল অভিযোগই আসছে শেখ হাসিনা পরিবার এবং আওয়ামী লীগের নেতার কর্মীদের বিরুদ্ধে। শেখ হাসিনার বেয়াই রাজাকার মোশাররাফ ফরিদপুরে হিন্দু বাড়ি দখল করেছেন সেই অভিযোগ ও রয়েছে।
Nationalist View – analysing Bangladeshi politics.
Copyright © 2020 Nationalist View – All rights reserved.