আওয়ামীলীগ মেজর জিয়াকে বিভিন্নভাবে ছোট করছে। বিভিন্ন সময় তারা বিভিন্ন ধরনের গুজব ছড়িয়ে থাকে। কিছুদিন আগে দেখলাম কয়েকজন আওয়ামীলীগের এমপি সংসদে দাঁড়িয়ে বলছেন যে, মেজর জিয়া নাকি যুদ্ধের সময় পাকিস্তানের গুপ্তচর ছিলেন। কতোটা নিকৃষ্ট মনমানসিকতা হলে সংসদে দাঁড়িয়ে বাংলাদেশের একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা, সম্মানিত ব্যক্তি এবং বাংলাদেশের সাবেক প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানকে নিয়ে এধরনের কুমন্তব্য করতে পারে? মেজর জিয়াকে নিয়ে কথা না বললে যেন তাদের পেটের ভাত একদম হজমই হয়না।
যারা আমার মতো মুক্তমনা, ইতিহাস নিয়ে যারা কিছুটা হলেও জ্ঞান রাখে কিংবা জানতে ইচ্ছুক তাদেরকে বলি, শেখ মুজিবুর রহমান যদি ২৫ মার্চ গ্রেফতার না হতেন তাহলে হয়ত ঘোষনাপত্র তিনি-ই পাঠ করতেন। কিন্তু তিনি যখন জেলে তখন এই সংগ্রামে হাল ধরার কে ছিল? কে তখন বঙ্গবন্ধুর দায়িত্ব পালন করার জন্য এগিয়ে এসেছিল? কার সাহস ছিল সামনে এগিয়ে আসার? আওয়ামীলীগের নেতারাই বা তখন কোথায় ছিল? কোন গর্তে লুকিয়েছিল তারা?
তৎকালীন সময়ে মেজর জিয়া পাকিস্তানের সেনাবাহিনীতে কর্মরত ছিলেন ঠিকই। কিন্তু শেখ মুজিবুর রহমান গ্রেফতার হওয়ার পর নিজ জন্মভূমির প্রতি মায়ার টানে তিনি পাকিস্তানকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে বাংলাদেশের পক্ষে বিদ্রোহ করেন, সম্মুখ যুদ্ধে এগিয়ে আসেন। শেখ মুজিবুরের পক্ষে স্বাধীনতার ঘোষনাপত্র পাঠ করেন।
একবার চিন্তা করে দেখুন তো, যদি বাংলাদেশ স্বাধীন না হত তখন মেজর জিয়ার কী হত? তাকে কি পাকিস্তানি সেনাবাহিনী ছেড়ে দিতো? পাকিস্তানিরা বিদ্রোহী বলে হত্যা করে ফেলতো। কারন তিনি পাকিস্তানের সেনাবাহিনী হয়েও বাংলাদেশের পক্ষে যুদ্ধ করেছেন। তিনি তাঁর বীরত্ব দেখিয়েছেন, আওয়ামীলীগের নেতাদের মতো গর্তে লুকিয়ে যাননি।
অথচ তাঁর নামে আওয়ামীলীগ বিভিন্ন ভাবে মিথ্যা কুৎসা রটিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু কুৎসা রটিয়ে কি সত্য গোপন করা যাবে? ইতিহাস কি পাল্টে দেওয়া যাবে? হ্যাঁ আওয়ামীলীগকে প্রশ্ন করছি, বদলে দিতে পারবেন বাংলাদেশের ইতিহাস? অনেক মুক্তিযোদ্ধা তো এখনও বেঁচে আছেন। তাঁরা আপনাদের কে সেই ইতিহাস বদলের সুযোগ দেবে? মুক্তিযুদ্ধ কি শুধু মাত্র আপনাদের বাবার সম্পত্তি? ভুলে যাবেন না আমাদের দেশের বীররা নিজের বুকের রক্ত ঝরিয়েছেন বর্তমান এই স্বাধীনতার জন্য। আর আপনারা এই স্বাধীনতার অপব্যবহার করছেন? লজ্জা লাগে না আপনাদের? বাংলাদেশ স্বাধীন করার পেছনে এবং স্বাধীনতার পরবর্তীতে বাংলাদেশের প্রতি মেজর কতটুকু অবদান তা আপনারা একটু উইকিপিডিয়াতে গেলেই দেখতে পাবেন।
এভাবে আপনারা মিথ্যাচার করে পার পেয়ে যাবেন না। আমরাও ইতিহাস জানি, চর্চা করি। আপনাদের কাছে আমার বিনীত অনুরোধ – যার যতটুকু প্রাপ্য তাকে তার প্রাপ্য সম্মানটুকুই দিন ।