স্বৈরাচারী আওয়ামী সরকার তাদের নিজেদের দোষ ঢাকতে ব্যবহার করছে আমাদের আইন প্রয়োগকারী প্রশাসনকে। তাদেরকে একপ্রকার স্বৈরাচারী প্রশাসনে পরিণত করতে সক্ষম হয়েছে আওয়ামীলীগ সরকার। যে পুলিশ প্রয়োগকারী প্রশাসনের অন্যতম বাহিনী হলো আমাদের দেশের পুলিশ বাহিনী।
তাদের জন্য রয়েছে গাঢ় নীল রঙের পোশাক বা ইউনিফর্ম। সেই ইউনিফর্মে থাকে পুলিশের ব্যাজ ও নেমপ্লেট যাতে করে সাধারণ মানুষ সহজেই বুঝতে পারে সেই ইউনিফর্ম পরিহিত ব্যক্তি পুলিশ বাহিনীর কর্মকর্তা এবং তার নেমপ্লেট এ তার নাম থাকার কারন হলো যাতে সহজেই তাকে সাধারণ মানুষ সনাক্ত করতে পারে।
কিন্তু আমাদের স্বৈরাচারী সরকারের আমলে দেখা যাচ্ছে ভিন্ন চিত্র। পুলিশের বুকে নেই আর নেমপ্লেট। প্রায়ই তাঁরা নেমপ্লেট খুলে রাখছে। নীতি নৈতিকতার তো কোন বালাইই নাই, এখন তাঁরা নিজের নাম টা পর্যন্ত ধারণ করতে লজ্জিত বোধ করছে। তাছাড়া আরেকটি সুবিধা হলো, তাদেরকে দিয়ে সরকার যখন যা ইচ্ছে তাই করিয়ে নিচ্ছে, তখন বিচার বহির্ভূত এই সকল কাণ্ডে তাদের নাম পরিচয় গোপনই রয়ে যাচ্ছে। এবং এভাবেই তাঁরা নির্ঝঞ্ঝাটভাবে তাদের বেআইনি কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। কি করানো হচ্ছেনা পুলিশকে দিয়ে? চুরি, হত্যা, খুন, ডাকাতি, অপহরন থেকে শুরু করে গুম করা – সব কিছুতেই এখন পুলিশ দিয়ে করানো হচ্ছে। একটা দেশ ঠিক কতটুকু নীচে নেমে গেলে দেশের আইন শৃংখলা বাহিনীকে দিয়ে এইসব অপঃকর্ম করাতে পারে সেটা আসলে চিন্তার বিষয় হয়েছে। গত ৫ ই মে হাসিনার পুলিশ বাহিনীকে দিয়ে হাজার হাজার আলেমকে নির্বিচারে হত্যা করা হয়েছিলো শাপলা চত্বরে। সেদিন সারা বাংলাদেশই আসলে অভিশাপ দিয়েছিলো হাসিনার এই পেটোয়া বাহিনীকে। রাঁতের আঁধারে হিংস্র এই জানোয়ার হাসিনা ও তার বাহিনী যে তান্ডম বাংলাদেশের আলেম সমাজের উপর চালিয়েছিলো সেটি এই বাংলার ইতিহাসে এক ন্যাক্কারজনক অধ্যায় হিসেবেই বিবেচিত হয়ে থাকবে সারাটি জীবন।
বাংলাদেশের পুলিশ সহ র্যাব, বিজিবি কিংবা আর্মি সবখানেই শেখ হাসিনার পিতার দেশ ফরিদপুরের গোপালগঞ্জের জয় আর জয়কার। সকল চাকুরিতে শুধু এই অঞ্চলের ব্যাক্তিদের প্রাধান্য দেয়া হয়েছে অবৈধভাবে। প্রশাসনের এমন কোনো পর্যায় নেই যেখানে হাসিনা তার নিজের লোকদের বা দলীয় লোকদের অধিষ্ঠিত করেনি। একটা দেশ কি আদৌ এইভাবে চলতে পারে? একতা দেশে যদি মানব সম্পদের সুষম বন্টন না হয় তবে সে দেশের তরুনেরা হতাশা গ্রস্থ হয়ে পড়বে, ঝুঁকে পড়বে সকল, ধরনের অপরাধ কর্মে। এটাই যেন হাসিনার চাওয়া। এটাই যেন এই সরকারের চাওয়া। দেশকে একটা গৃহ যুদ্ধের দিকে ক্রমাগত ঠেলে দিয়ে কি ভারতের এজেন্ডাই বাস্তবায়ন করছে হাসিনা? এমনটাই কি তার একমাত্র লক্ষ্য? ভারতের সাথে তাঁবেদারি করে এই মসনদ টিকিয়ে রাখাটাই এই সরকারের মূল অভিপ্রায় আর সে কাজে এই সরকার তার পেটোয়া বাহিনীকে দিয়ে যা ইচ্ছে তাই করিয়ে নিচ্ছে।
হাসিনার সমস্যা হোলো সে ইতিহাসের পাঠ বিবেচনা করেনি। ইতিহাস যে ফিরে ফিরে আসে এবং কাউকে ছেড়ে কথা কয়না সেটির-ই পাঠ এখন হাসিনার জন্য সবচাইতে বেশী প্রয়োজন। তার বাবা যেমন এক সময় ফেরাউনের মত এই দেশের ঘাড়ে চেপে বসেছিলো এবং চলে যেতে হয়েছে নিহত হবার মধ্যে দিয়ে সেই একই পথে কি হাসিনা চলছে না। কারো কথা বলবার স্বাধীনতা নেই, ক্ষমতা নেই যেন চারিদিকে একটা নাক-কান-মুখ বন্ধ করা এক সময়। কেউ কিছু বললেই তাকে গ্রেফতার করা নির্যাতন করা এবং তাকে ক্রমাগত হ্যারাস করা এসবই হয়ে উঠেছে হাসিনা সরকারের পাথেয়। আমরা এমন একটা দম বন্ধ করা অবস্থা থেকে মুক্তি চাই। আমরা ভালোভাবে বেঁচে থাকার গ্যারান্টি চাই।