সাংবাদিক হাসান রুবেল : বিলেতের বাঙ্গালী কমিউনিটির বেশ কিছু সিনিয়র সাংবাদিকদের কাছে গাদ্দার চৌধুরী নামে তিনি পরিচিত । লন্ডনে সাংবাদিকতার প্রাক কাল থেকেই কয়েক পাউন্ডের বিনিময়ে যেকোন ধরনের মিথ্যা তথ্যের কলাম লিখতে রাজি তিনি। ১৯৯৬ সালের শেষের দিকে পূর্বলন্ডনে একটি সাপ্তাহিক সংবাদ পত্রে লেখালেখি করতে তিনি । সেই সময় ব্রিটেনের সরকারী কোষাগার থেকে নিজেকে বেকার দেখিয়ে কাউন্সিলের বেনিফিটের উপর ভর করে চলতেন । তখন সাংবাদিকদের আড্ডায় তিনি বেনিফিট গ্রহিতাদের নিয়ে কুরুচি বাক্য চয়ন করেন । তখন থেকে উপস্থিত সাংবাদিকরা তাকে গাদ্দার চৌধুরী নামে চিনেন ।
বাংলাদেশ থেকে অনেকেই লন্ডন আসলে তার সাথে দেখা করতে যায় । মুলত একটি ফটোসেশন মুক্ষম বিষয় । সম্প্রতি হাসপাতালে থাকা অবস্থায় অনেকে সেই সব ফটো গুলো থেকে ভালো একটি সেলফি বের করে রেখেছিল । অনেকগুলো সংবাদপত্র তার জীবনী নিয়ে ফিচার প্রস্তুতি করেছে । ব্রিকলেন মসজিদে হয়ত জানাজা হতে পারে বলে ধারনা করা হচ্ছিল । কিন্তু আল্লাহ তালা আরো কিছু দিন তার হায়াত বৃদ্ধি করে দিলেন । হয়তো তিনি এবার ইসলাম নিয়ে লিখবেন ।
কিন্তু সম্প্রতি তিনি জিয়া পরিবার নিয়ে কয়েক লাইন লিখেছেন । তিনি হয়তো জানেন না কিভাবে তরুন প্রজন্মকে উৎসাহিত করতে হয় । তাই জাইমা রহমানকে নিয়ে ভালো কিছু লিখতে পারে নাই । মুলত তার জীবনে দেশের জন্য ভালো কোন কিছুই লিখেন নাই । সর্বদা দল কানা হয়ে কয়েকটি পয়সার লোভে কয়েকটি দলের পক্ষে বানিয়ে বানিয়ে লিখে গেছে । বিলেতে মিথ্যার লেখার জন্য ২০-৫০ পাউন্ড নিতেন তিনি । আর দেশের জাতীয় দৈনিক থেকে ২০০-২৫০ পাউন্ড নিতেন তিনি।
বিলেতের সবাই জানে তিনি মেয়েদের সাথে দেখা হলে কপালে চুমু আর পাশে বসিয়ে গায়ে হাত দেয়া তার স্বভাব জাত অভ্যাস । মিষ্টি কথার ছলে ছলে চলতে থাকে হাতের নোংরামী । এসব কারনে বিলেতের কোন মহিলা নেত্রীদের এখন আর তার বাসায় তেমন একটা যাতায়াত নেই । সম্প্রতি ইতালী থেকে আসা কয়েক জন নারী নেত্রী বেশ কয়েকবার যাতায়াতের পর, তারাও যাতায়াত বন্ধ করে দিয়েছে । অ– দেব নামে একজন নেত্রী জানিয়েছে , বিয়ের পর তাকে একদিন ফোন করে তার বাসায় রান্না করে নিয়ে যাওয়ার জন্য গাদ্দার চৌধুরী ঢেকে ছিলেন । সময় করে একদিন মেয়েটি তার বাসায় একা বেড়াতে যায় । তখন আড্ডার মাঝে গাদ্দার চৌধুরী মেয়েটিকে পাশে বসিয়ে তার কাছে বাসর রাতের গল্প জানতে চায় । সেই মুহুর্তে গাদ্দার চৌধুরীর হাতটা মেয়েটি সুন্দর ভাবে কাধের উপর থেকে নামিয়ে হেসে দেন । তারপর থেকে মেয়েটি গাদ্দার চৌধুরীর বাসায় যাওয়া বন্ধ করে দেয় । এই ধরনের অনেক গুলো সত্যি কাহিনী বাঙালি কমিউনিটিতে রয়েছে । তারপরও মিডিয়ায় একটু ফেম হওয়ার জন্য তার কাছে সবাই যাচ্ছে ।
গাদ্দার চৌধুরীর ক্যারেকটা কতটুকু খারাপ তা সবচে বেশী বলতে পারবে যুক্তরাজ্যের বাম-আওয়ামীপন্থী নেতৃবৃন্দ । যার কারনে তার সাথে শেখ হাসিনা প্রায় সব ধরনের যোগাযোগ বন্ধ করে দিয়েছে । বিগত লন্ডন সফরে হাসিনার সকল অনুষ্ঠানেই নাজমুল ও গাদ্দার চৌধুরীকে নিষিদ্ধ করেছে । এমনকি গাদ্দার চৌধুরীর সাথে টিউলিপের যোগাযোগ হাসিনা কখনো রাখেনি । এছাড়া গাদ্দার চৌধুরীর সাথে মাসুদা ভাট্টির সম্পর্ক নিয়ে অনেক গুঞ্জন ছিল ।
সব কিছু মিলিয়ে গাদ্দার চৌধুরী একজন জীবন্ত উন্মাদ। তাকে অর্ধ উন্মাদ বললেও সম্মান করা হবে। এই উন্মাদ অবস্থাতেই তার জীবনের শেষ পরিণতি ঘটবে। তিনি যদি একজন ভালো মনের অধিকারী হতেন, তাহলে হয়ত জাইমা রহমানের প্রশংসায় একটি কলাম লিখতেন । তিনি লিখতে পারতেন মুক্তিযোদ্ধার সন্তান তারেক রহমানের একমাত্র কন্যা জাইমা রহমান বিলাতের লিঙ্কনস-ইন থেকে সসম্মানে ব্যারিস্টারি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছেন। এখন তিনি ব্যারিস্টার জাইমা রহমান। কিন্তু গাদ্দার চৌধুরী তা লিখতে পারেন নাই । কারন মানুষকে সন্মান কিভাবে দিতে হয় তা তিনি পরিবার থেক শিখতে পারেননি । মুসলমানের ঘরে জন্ম গ্রহন করলেও ইসলামী কোন জ্ঞান অর্জন করা হয়ে উঠেনি । তাই তিনি জাইমা রহমান সহ বিলেতে পড়াশোনা করে উচ্চতর ডিগ্রি অর্জনকারীদের নিয়ে চমৎকার লেখালেখি তার কলমে কখনো উঠে আসেনি । এমনকি দেশের শিক্ষার্থীদের নানা আন্দোলনের সময় তার কলাম লিখা চুপ ছিল । তনু ও নুসরাত হত্যার মত জঘন্য হত্যাকান্ডের সময়ও তিনি দুই কলম লিখতে পারেনি । নিরাপদ সড়কের দাবীতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে সময় কিছু লিখতে পারেন নি । আবরার হত্যার বিচারে কিছু লিখতে পারেননি । কিন্তু জাইমা রহমানের ব্যারিস্টার ডিগ্রি অর্জনের খবর শুনে তার মাথা গরম হয়েছে উঠেছিল । তখন থেকে লেগে গেছেন জাইমার বিরুদ্ধে লেখা । কতটুকু নিচু মনের মানুষ হলে এই ধরনের লেখা লিখতে পারেন তিনি ।
আগামীতে কলাম লিখার জন্য গাদ্দার চৌধুরীকে কিছু তথ্য তুলে ধরতে চাচ্ছি । আপনার প্রতি সন্মান রেখে বলছি , লন্ডনে বাংলাদেশ হাইকমিশনে লাল-সবুজের যে পতাকাটি আপনি দেখেছেন , সেই পতাকাটির জন্য মুক্তিযোদ্ধে জীবনবাজি রেখে যুদ্ধ করেছিলেন ব্যারিস্টার জাইমা রহমানের দাদা – বীর মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউর রহমান । তাই আগামীতে জিয়াউর রহমানকে মুক্তিযোদ্ধা বলে সন্মান জানানোর আহবান রহিল । সেই সাথে দেশ নায়েক তারেক রহমানকে মুক্তিযোদ্ধার সন্তান হিসেবে শ্রদ্ধার আহবান জানানো হলো । যদি আপনার কাছে মুক্তিযুদ্ধাদের প্রতি কোন ধরনের সন্মান জাগ্রত থাকে , তাহলে লিখতে পারেন ।
১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে আপনি সপরিবারে সীমান্ত পাড়ি দিয়ে আগরতলা হয়ে কলকাতা পৌঁছান। আজো ১৬ কোটি মানুষের প্রশ্ন- মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহন না করে কেন ভারতে পালালেন ?সেখানে আপনি শেখ সেলিম সহ আরো অনেক নেতাদের সাথে ভাল সময় পার করেছেন । সেই সময় আপনার দেশের প্রতি কি কোন ধরনের ভালোবাসা ছিলনা ? দেশের মানুষকে পাকিস্তানীদের হাতে তুলে দিয়ে পরিবার নিয়ে ভালই ছিলেন আগরতলায় ।
আপনাকে আরো একটি তথ্য দিচ্ছি, তিনবারের সাবেক সফল প্রধানমন্ত্রী , গনতন্ত্রের নেত্রীকে বর্তমান অবৈধ সরকার জেলের ভিতর আটক করে রেখেছে । অন্যদিকে বিনা অপরাধে মুক্তিযুদ্ধার সন্তানকে নির্বাসিত জীবন যাপন করতে হচ্ছে । অথচ ৯ই অক্টােবরের লগি বৈঠা দিয়ে হত্যা কারীর হুকুম দাতা, শাপলা চত্বরের হত্যাকারী , বিডিআররের সৈনিকদের হত্যাকারী হাসিনা বহাল তবিয়াতে রয়েছে । বরং আপনি হাসিনাকে হত্যাকারীর পরিবার বলে লিখতে পারেন । তাই আর কত টাকার বিনিময়ে লিখতে চাচ্ছেন ?
শেখ হাসিনার বোন শেখ রেহানার কন্যা টিউলিপ সিদ্দিক ব্রিটিশ রাজনীতিতে সফল নেত্রী । তার দলের নাম লেবার পার্টি । বর্তমান যুক্তরাজ্য বিএনপির সভাপতি ও সাধারন সম্পাদক লেবার পার্টির সক্রিয় সদস্য । তারা লেবার পার্টির প্রায় সকল অনুষ্ঠানে যোগদান করেন । তারা চাচ্ছে ব্রিটেনে লেবার পার্টি সরকার গঠন করুক । তাহলে কিভাবে তারেক রহমান তাদের দিয়ে টিউলিপ সিদ্দিকির বিরুদ্ধে নির্বাচন করার আহবান জানাবেন ?
এছাড়া যুক্তরাজ্য বিএনপির ১০-১২ টি ভোট রয়েছে টিউলিপ সিদ্দিকির আসনে । এই ১০-১২ টি ভোটারের মধ্যে ব্রিটেনে বেড়ে উঠা ভোটারের সংখ্যা বেশী । তারা তাদের মতামতের বাহিরে কখনো ভোট দিবে না । তাই গাদ্দার চৌধুরীকে বলছি সবকিছুতে তারেক রহমানকে না জড়ালে আপনার জন্য মঙ্গল । কারন তারেক রহমান সর্বদা বিলেতের বাঙ্গালীদের সফলতায় উচ্ছসিত ।
যুক্তরাজ্যের সাধারণ নির্বাচনে নিজ নিজ আসন ধরে রাখতে লড়ছেন বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত চার কন্যা-টিউলিপ রেজওয়ানা সিদ্দিক, রুশনারা আলী , আপসানা বেগম ও রূপা হক । চার জনই সেইভ সিটে রয়েছে । তাই আগামী কয়েক বছর তাদের টানা বিজয় নিশ্চিত । এই আসন গুলোতে কনজাভেটিব দল খুবই দুর্ভল । ফলে লেবার পার্টি থেকে কলা গাছ ধারালেও বিজয় নিশ্চিত (রুপক কথা) । তাই আপনাকে বলবো দেশের সাধারন মানুষের কাছে বিলেত সম্পর্কে মিথ্যা তথ্য তুলে ধরবেন না ।
সর্বশেষ ব্যারিস্টার জাইমা রহমানের প্রতি আহবান রহিল । গাদ্দার চৌধুরীকে মাফ করে দিও । বয়স হলে মানুষ শিশূদের মত ব্যবহার করে । ভুল বলতে থাকে । সর্বপুরি গাদ্দার চৌধুরীর সম্পর্কে না জানাই ভালো । তার জীবনটা শুধুই নারী নিগ্রহ আর টাকার বিনিময়ে মিথ্যা কলাম লিখা ছাড়া আর তেমন কিছু নেই । সেই সাথে ভারতের র’ এর এজেন্ট হিসেবে কাজ করে যাচ্ছে । ।
ব্যারিস্টার জাইমা রহমান আপনি হয়তো জানেন না , গাদ্দার চৌধুরীকে লন্ডনের কোন সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবার পছন্দ করে না । যার ফলে মুসলমানদের কোন সামাজিক অনুষ্ঠানে এক প্রকার বয়কট করা হয় । তাই তার লেখায় মনক্ষুন্ন হওয়ার কিছু নেই । বাজে লোকেরা কখনো সুন্দর কিছু প্রত্যাশা করতে পারে না ।
আপনার পরিবারের দিকে তাকিয়ে আছে আগামীর বাংলাদেশ । টেকনাফ থেকে তেতুলিয়া রূপসা থেকে পাথুরিয়া প্রতিটি পরতে পরতে রয়েছে জিয়া পরিবার । আপনা উচ্চতর ডিগ্রি বাংলাদেশের সাধারন মানুষকে ন্যায়ের পথে লড়ার সাহস জোগাবে । আইনজীবীরা হচ্ছেন সোশ্যাল আর্কিটেক্ট। জনগণের অধিকার ও বিচার সুনিশ্চিত করতে আইনজীবীদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। বাংলাদেশের বিচার ব্যবস্থা আজ বঙ্গুর । তাই সঠিক আইনের শাসন বাস্তবায়নে একজন কর্মী হিসেবে আপনার দিকে তাকিয়ে রয়েছে বাংলাদেশ ।
অপর দিকে ভালো থাকেন গাদ্দার চৌধুরী । কমিউনিটির গাদ্দার চৌধুরী হিসেবে বেঁচে থাকুন । আপনার মৃত্যুর পর যুক্তরাজ্য আওয়ামী পরিবারের অনেক সিনিয়র নেতৃবৃন্দরা বলবে শালায় অবশেষে লন্ডন ত্যাগ করিল । জীবনে পয়সার জন্য বিএনপিকে বিরুদ্ধে আমাদের পক্ষ হয়ে কত মিথ্যা লেখা লিখেছে । সম্প্রতি হাসিনার কুনজরে থাকার কারনে যুক্তরাজ্যের সিনিয়র কেউ আর আপনার সাথে নেই । হয়ত আপনার জানাযায় সবাই উপস্থিত থাকিবে ।
প্রতিকি ছবি অনলাইন:
ছবিতে বরিশালের আবদুল গাফফার চৌধুরী ও কমিউনিটির বিশিষ্ট নারী নেতৃবৃন্দ । এই ছবিটি একটি প্রতিকি ছবি ।
collect from google.