আওয়ামী লীগের হাতে কি দেশ নিরাপদ? ইতিহাস বলে, এই প্রশ্নের উত্তর কোনোদিন হ্যাঁ হতে পারে না। কেন পারে না? কারণ আওয়ামী লীগ ও গণতন্ত্র কখনো এক সাথে চলার নজির নেই। দলটি যখনই ক্ষমতায় গিয়েছে হয় বাকশাল করেছে, নয় হত্যা করেছে গণতন্ত্র। আধুনিক রাষ্ট্র ব্যবস্থায় যেসব দেশে গণতন্ত্রহীন দেশ কখনো নিরাপদ থাকতে পারে না। হয় নিজে অনিরাপদ হয়ে পড়ে, অথবা অন্যের জন্য অনিরাপদ হয়ে পড়ে।
কেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের হাতে নিরাপদ নয়। কারণ, দলটি যখনই ক্ষমতায় এসেছে তখনই দেশের অর্থনীতির বারোটা বাজিয়ে ছেড়েছে। দেশে দুর্ভিক্ষ এনেছে, পুঁজিবাজার লুঠ হয়েছে, ব্যাংকখাত ফোকলা করে ফেলেছে। আওয়ামী লীগ যখনই ক্ষমতায় এসেছে প্রতিবেশী দেশটি বাংলাদেশের সঙ্গে প্রায় অঙ্গ রাজ্যের মতো আচরণ মতো আচরন করেছে। দেশের মানুষকে বিভক্ত করে সামাজিক সম্প্রীতি বিনষ্ট করেছে।
আপনার জানা আছে কি:
২০ কোটি লোকের দেশে অগ্নি নির্বাপনের জন্য কত জনকে নিয়োগ দেয়া আছে? বাংলাদেশে কতগুলো ফায়ার ব্রিগেড স্টেশন / সাব-স্টেশন আছে? ফায়ার সার্ভিস এর বাইরে সাধারণ নাগরিকদের আগুন নেভানো ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয় কিনা? বাংলাদেশ ফায়ার সার্ভিস এর বাৎসরিক বাজেট কত?
জানা থাকলে তথ্য গুলো দিন। জানা না থাকলে উন্নয়নের বিল্ডিং দেখে উন্নয়ন চুষে চেটে খেয়ে নাক ডেকে ঘুমিয়ে পড়ুন।
৫০ এর কাছাকাছি বা তার বেশি যাদের বয়স, তারা হয়তো স্মরণ করতে পারবেন- ১৯৭৬ সালে সারা দেশব্যাপী সকল সরকারি, বেসরকারি ও আধা সরকারি প্রতিষ্ঠানের নিরাপত্তারক্ষীদের ফায়ার ফাইটিং ট্রেনিং করানো হতো। এইসব প্রতিষ্ঠানে প্রতিটি তলায় ফায়ার এক্সটিংগুইশারের পাশাপাশি তিন বালতি বালু এবং তিন বালতি পানি থাকতো। ভবনগুলো চারতলা বা তার চেয়ে বেশী উঁচু হলে ছাদে আগুন নেভানোর উপযোগী করে অতিরিক্ত ধারণ ক্ষমতার পানির ট্যাঙ্ক নির্মাণ করতে হতো। প্রতিটি ফ্লোরে আগুন নেভানোর জন্য হাইড্রেন্ট ও হোস পাইপ এর ব্যবস্থা থাকত। তখনকার সময়ে টেক্সটাইল মিলে আগুন লাগা নিত্যনৈমিত্তিক ঘটনা ছিল। জুটমিলগুলোতে তো প্রতিদিন দুইতিনবার আগুনের পাগলা ঘন্টি বাজতো । এসব আগুন মিলের শ্রমিক বা নিরাপত্তারক্ষীরাই নিভিয়ে ফেলত। এসব আগুনে কেউ মারা গেছে এমনটা কখনোই শোনান যায়নি।
আর আজ এতো বছর পর এসে এই আওয়ামীলীগ সরকারের ক্ষমতায়নের সময় দেশের মানুষ কি দেখছে? অনুমোদনবিহীন বহুতল ভবন, সতর্ক করার পরও অবৈধভাবে ইমারত স্থাপনা, ফায়ার সার্ভিসে যথাযথ ইক্যুপমেন্টের অভাব, ঘিঞ্জি আবাসিক এলাকাগুলোর মধ্যে ভয়ানকভাবে গড়ে ওঠা অবৈধ কারখানা, সকল ক্ষেত্রে অনিয়ম, অগ্নি নির্বাপণের নিয়মনীতির অভাব, আরও কত কি! একের পর এক অগ্নিকান্ড ঘটেছে আর অসংখ্য মানুষ প্রাণ হারাচ্ছে। আওয়ামী জনগনের টাকা দিয়ে সরকারি কর্মকর্তাদের প্লেজার ট্রিপে বিদেশ পাঠাচ্ছে কিন্তু অগ্নিনির্বাপনের প্রয়োজনীয় অত্যাধুনিক যন্ত্রপাতি কিনছে না। এটি মাত্র একটি খাতের প্রসঙ্গ। দেশের প্রতিটি খাতেই এই পরিস্থিতি। আর আওয়ামী লীগ দিনরাত ২৪ ঘন্টা ব্যস্ত সময় পার করছে বিএনপিকে সাইজ করার কৌশলে। অতএব, আপনারা বুঝতেই পারছেন আওয়ামীলীগ সরকারের হাতে আমাদের এই সোনার বাংলাদেশ কতটুকু নিরাপদ!