আপনাদের কারো কি আবু বকরের কথা মনে আছে?
সেই যে গরিব ছাত্রটি যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিষয়ে ৩য় বর্ষে পড়ত এবং যার বাবা ছিল দরিদ্র দিনমজুর। ছাত্রলীগের পশুদের হাতে জীবন দেবার আগে যার জি পি এ ছিল রেকর্ড ব্রেকিং৩.৭৫। রেজাল্ট বের হবার পূর্বেই যার জীবন প্রদীপ নিভিয়ে দেয়া হয় তাঁর বিভাগের রেজাল্ট বের হবার পর দেখা গেল সেই গরিব, মেধাবী ছেলেটি ই অন্যান্য পরীক্ষার মতই তাঁর জীবনের সর্বশেষ পরীক্ষাতেও প্রথম হয়েছিল। কিন্তু রেজাল্ট বের হবার আগেই সে শিকার হয় ছাত্রলীগ নামধারী জানোয়ারদের পাশবিকতার শিকার।
তার হত্যাকারী ছাত্রলীগের নেতারা কিন্তু ঠিকই ২০১৭ সালে আদালতের রায়ে খালাস পেয়ে বের হয়ে গেছে । আবু বকরকে কেউ খুন করেনি ! একই ঘটনা ঘটেছিল বিশ্বজিৎ নামের ছেলেটির সাথে, আপনারা দেখেছিলেন কারা ওকে কুপিয়েছিল। কিন্তু আইন অন্ধ…. তাই দেখেনি… সবাই ছাড়া পেয়ে গেছে… সব্বাই!
তনুকে মনে আছে ? অথবা বগুড়ার সেই মা আর মেয়ের কথা – যাদের তুলে নিয়ে ধর্ষণ করেছিলো তুফান লীগ ? পটুয়াখালীর সেই হিন্দু মা আর মেয়ের কথা , যাদের তুলে নিয়ে ট্রলারে ধর্ষণ করেছিল ৬ সোনার ছেলের দল ?
অথবা বুশরা নামের মেয়েটি … যাকে ধর্ষন করে হত্যা করা হয়েছিলো ? ফাঁসির রায় পাওয়া সব নেতারাও কিন্তু খালাস পেয়ে বের হয়ে গেছে।
অথবা , গাজীপুরের সেই হতদরিদ্র বাবা আর মেয়েটির কথা , যে শিশু মেয়েটির ধর্ষনের বিচার না পেয়ে অসহায় বাবা মেয়েটিকে নিয়ে রেলগাড়ির নিচে শুয়ে পড়ে আত্মহত্যা করেছিল ? মনে পড়ে ?
মনে আছে পহেলা বৈশাখে মেয়েদের গণযৌননির্যাতন ? সকল ভিডিও ফুটেজ আর ইমেজ ছিল …কিন্তু কারা অপকর্ম করেছিল , তার কি বিচার হয়েছে ?
মনে আছে ৭ ই মার্চের সমাবেশ উপলক্ষে রাজধানীর রাস্তায় রাস্তায় সোনার ছেলেদের দ্বারা মেয়েদের যৌননির্যাতন ? হয়রানি ?
অথবা শাজাহান খানের শ্রমিকদের দ্বারা মেয়েদের শরীরে মাখানো কালি ? প্রতিনিয়ত বাসের ভেতর ধর্ষন ? কোন সুবিচার পেয়েছেন ?
মনে পড়ে , হলের ভেতর নিয়মিত ছাত্রীনির্যাতনের প্রতিবাদ করতে গিয়ে উলটো বহিষ্কৃত হতে হয়েছিল আপনার সহপাঠিনীদের ?
অথবা চাকরির দাবীতে আপনার ও আপনার সহপাঠীর উপর নেমে আসা নির্যাতন, আপনার সহপাঠিনীর বুকের ওড়না ছিড়ে ফেলা …অথবা সংবেদনশীল অঙ্গে পশুদের হাত …মনে পড়ে ?
অথবা নিরাপদ সড়কের দাবীতে রাস্তায় নামা আপনার ছোট ভাই বোনদের উপর নেমে আসা অত্যাচার ?
আসছে ত্রিশে ডিসেম্বর এ আপনি চাইলে ভোট না দিয়ে বাসা থেকে বের না হয়ে একটি রিলাক্সড দিন কাটাতে পারেন এবং পরবর্তী পাঁচ বছর স্কুল কলেজ এমনকি সব জায়গায় আপনি নিজেকে অথবা আপনার নিকটজনদের প্রতিনিয়ত হয়রানির শিকার হতে দেখবেন, কিন্তু ফলশ্রুতিতে কোন বিচার হবে না। অথবা নির্বাচনের দিন ত্রিশে ডিসেম্বর এ কষ্ট করে নিকটস্থ ভোটকেন্দ্রে গিয়ে ভোট দিতে পারেন সকল অবিচার, প্রহসন আর নিপীড়নের বিরুদ্ধে। তাই আপনার পছন্দ, আপনার ভবিষ্যৎ। হয় আপনি নিজে ঐ হায়েনাদের দ্বারা ভুক্তভোগী, নির্যাতিত হবেন নতুবা আপনি আপনার ভোটের দ্বারা নিবেন এই অনাচারের সঠিক বদলা।



