শেখ হাসিনা এবং তার আওয়ামী ডাকাত বাহিনীর হাতে সারা দেশ আজ জিম্মি। ব্যাংক গুলো ও আজ আর নিরাপদ নয়। শেখ হাসিনা এবং তার ছর, বাটপার সাঙ্গ পাঙ্গদের সন্তুষ্ট করতে পারলে যেকোন কিছু এমনকি ব্যাংক গুলো ও লুট পাট এর আওতায় আনা যায় সেটি আবারো প্রমাণ করলো আওয়ামীলীগ। সর্বশেষ হিসাব অনুযায়ী বাংলাদেশের বিভিন্ন ব্যাংক থেকে ২২ হাজার ২২১ কোটি টাকা তসরুপ করে ফেলেছে আওয়ামী হায়েনারা। আওয়ামী ঘরানার প্রায় ২০ জন শীর্ষ ঋণ খেলাপি কয়েক বছরে সাধারণ মানুষের এই বিশাল অংকের টাকা আত্মসাৎ করেছে। বাংলাদেশ ব্যাংক এই টাকা কে অবলোপন হিসাবে ঘোষণা করেছে। আইন অনুযায়ী এই অবলোপনকৃত অর্থ আদায়ের বাধ্য বাধকতা থাকলেও কুনো এক অদৃশ্য শক্তির ইশারাতে এন সি সি ব্যাংক, স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংক, এ বি ব্যাংক একটি টাকাও উদ্ধার করতে পারেনি। একই অবস্থা দেশের অন্যান্য ব্যাংক গুলো তেও।
বিদ্যমান পরিস্থিতিতে অবলোপনের টাকা আদায়ে সংশ্লিষ্ট ব্যাংকগুলোকে সতর্ক করে চিঠি দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। গত ১৫ মার্চ বিভিন্ন ব্যাংকে পাঠানো ওই চিঠিতে বলা হয়, ‘শীর্ষ ২০ অবলোপনকৃত ঋণ থেকে আদায় সন্তোষজনক নয়। যেসব পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে তাও ফলপ্রসূ নয়। বিশেষ করে উল্লিখিত চার ব্যাংকের আদায় শূন্য। এ বিষয়ে আদায় নিশ্চিতে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণে আপনাদের সতর্ক করা যাচ্ছে।’
উল্লেখ্য, খেলাপি অবস্থায় পাঁচ বছর পর্যন্ত কোনো ঋণ আদায় করতে না পারলে তা ব্যাংকের মূল হিসাব থেকে বাদ দিয়ে ভিন্ন খাতায় হিসাব রাখা হয়। তখন এই ঋণকে অবলোপন বলা হয়। তবে অবলোপন করার আগে অর্থঋণ আদালতে একটি মামলা করতে হয়। পাশাপাশি ওই খেলাপি ঋণের বিপরীতে শতভাগ নিরাপত্তা সঞ্চিতি বা প্রভিশন রাখতে হয়।
এবি ব্যাংকের কোম্পানি সচিব মহাদেব সরকার বলেন, ‘দীর্ঘদিন খেলাপি থাকার পর ইলিয়ার্স ব্রাদার্স, মোস্তাফা গ্র“পসহ বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের ঋণ অবলোপন করা হয়েছে। কিন্তু এরা টাকা দিচ্ছে না। ছলে-বলে-কৌশলে পার পেয়ে যাচ্ছেন। আমরা চেষ্টা করে যাচ্ছি কিন্তু কুলিয়ে উঠতে পারছি না।’
বাংলাদেশ ব্যাংকের এক প্রতিবেদন অনুযায়ী, বিভিন্ন ব্যাংকের শীর্ষ ২০ খেলাপির কাছে গত সেপ্টেম্বর পর্যন্ত হিসাবে আটকা পড়েছে ৩২ হাজার ৪৩৫ কোটি টাকা। এ অর্থের ২২ হাজার ২২১ কোটি টাকাই অবলোপন করা হয়েছে।
এদিকে বাংলাদেশ ব্যাংকের সিআইবির (ক্রেডিট ইনফরমেশন ব্যুরো) সর্বশেষ প্রতিবেদন (গত বছরের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত) অনুযায়ী, একক প্রতিষ্ঠান হিসেবে সবচেয়ে বেশি খেলাপি ঋণ রয়েছে চট্টগ্রামভিত্তিক কোম্পানি ইলিয়াস ব্রাদার্সের। ১৩টি ব্যাংকে প্রায় ৮৯০ কোটি টাকা ঋণ খেলাপি এই প্রতিষ্ঠান, যা অন্তত দুটি বেসরকারি ব্যাংকের পরিশোধিত মূলধনের সমান। এ ঋণের বিপরীতে কোনো ধরনের যথাযথভাবে জামানতও রাখা হয়নি। যার কারণে খেলাপিদের কাছ থেকে অর্থ আদায় সম্ভব নয়। অর্থাৎ সম্পূর্ণ জালিয়াতির মাধ্যমেই এ ধরনের ঋণ নেয়া হয়েছে বলে সংশ্লিষ্টদের অভিযোগ।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ড. মইনুল ইসলাম বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের উদ্বেগ প্রকাশ করে চিঠি দিয়ে কোনো কাজ হবে না। ঋণের টাকা উদ্ধারে এখন প্রয়োজন আলাদা ট্রাইব্যুনাল গঠন করা। শীর্ষ ১০ খেলাপিকে ট্রাইব্যুনালের মাধ্যমে বিচার করতে হবে। প্রয়োজনে জেলে পাঠাতে হবে। তা না হলে খেলাপিদের ধরা সম্ভব নয়।
তিনি আরও বলেন, এদের বেশির ভাগই ইচ্ছাকৃত ঋণখেলাপি। এরা অত্যন্ত শক্তিশালী। তারা জানে ঋণ নিলে ফেরত দিতে হবে না। তারা কালো টাকা এবং শক্তি দিয়ে বছরের পর বছর আইনি প্রক্রিয়া এড়াতে সক্ষম। অর্থঋণ আদালতের মাধ্যমে খেলাপিদের ধরা সম্ভব নয়, এটা এক ধরনের প্রতারণা।
খন্দকার ইবরাহিম খালেদ, বাংলাদেশ ব্যাংক এর সাবেক ডেপুটি গভর্নর , এর মতে এমতাবস্থায় ঋণ গ্রহীতা এবং ঋণ দাতা উভয়ের বিরুদ্ধেই আইনগত পদক্ষেপ নেয়া উচিত। ব্যাংক গুলোর এম ডি বিশেষ করে যারা অবসরে গেছেন তাদেরকে প্রথমেই জবাবদিহি করতে হবে। কার আমলে কত টাকা, কাকে, কিভাবে, কোন শর্তে ঋণ দেওয়া হয়েছে এবং এই টাকা উদ্ধারে কি পদক্ষেপ নিয়েছেন তার বিস্তারিত নথিগত দলিল বাংলাদেশ ব্যাংক এর কাছে অতি সত্তর জমা দিতে হবে।কারন এইসব এম ডি গণ ও এই ঋণ গুলোর একটি অংশ পেয়ে থাকেন বলে অনুসন্ধানে জানা গেছে। অন্যদিকে, বাংলাদেশ ব্যাংক এর একজন বর্তমান উপদেষ্টা এস কে চৌধুরী বলেছেন, অবলোপনকৃত অর্থ আদায়ে বাংলাদেশ ব্যাংক বরাবরই তৎপর। তদুপরি, বিষয়টি নিয়ে জনমনে প্রশ্ন দেখা দেয়ায় মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে অর্থ মন্ত্রনালয়ের একজন উপসচিব এর নেতৃত্বে তিন সদস্য বিশিষ্ট একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে যা অতি সত্ত্বর একটি রিপোর্ট প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে জমা দেবে।