জননেত্রী(!)শেখ হাসিনা আবারও একটি বিশ্ব রেকর্ড গড়েছেন। এবার তিনি প্রথম স্থান অধিকার করেছেন বিশ্বের সবচেয়ে নিকৃষ্ট শাসক হিসাবে। ‘দ্যা স্ট্যাটিস্টিক্স ইন্টারন্যাশনাল’, যা সিঙ্গাপুর এর একটি আন্তর্জাতিক ভাবে খ্যাতনামা জরিপ প্রতিষ্ঠান, তাদের জরিপ এ উল্লেখ করেছে যে শেখ হাসিনা পৃথিবীর সব চাইতে নিকৃষ্ট শাসক। যেই জরিপ এ দ্বিতীয় স্থান অধিকার করেছেন সিরিয়ার স্বৈর শাসক বাশার আল আসাদ এবং তৃতীয় স্থানে আছেন উত্তর কোরিয়ার কুখ্যাত শাসক কিম জং উন।
‘দ্যা স্ট্যাটিস্টিক্স ইন্টারন্যাশনাল’ এর জরিপে নির্বাচন পদ্ধতি, নাগরিকদের গণতান্ত্রিক অধিকার, বিচার বিভাগের স্বাধীনতা, আইনের শাসন, বাক ও ব্যক্তি স্বাধীনতা এবং নাগরিকদের জীবন ও সম্পদের নিরাপত্তা বিষয় বিশ্লেষণের পর বিশ্বের নিকৃষ্ট শাসক হিসেবে সরকার প্রধানদের নিয়ে এই মূল্যায়নধর্মী রিপোর্টটি করা হয়।
গণতন্ত্র এবং আইনের শাসন নিয়ে জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে প্রশ্নবিদ্ধ ৫১টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে বিশ্বের এক নম্বর নিকৃষ্টতম শাসক হিসেবে বিবেচনা করার যৌক্তিকতা তুলে ধরা হয় বাংলাদেশ চ্যাপ্টারের আলোচনায়। এতে বলা হয়, সিরিয়া এবং নর্থ কোরিয়ার পরিস্থিতি বাংলাদেশের পরিস্থিতি থেকে সম্পূর্ণ আলাদা। সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাসার আল আসাদের ক্ষমতায় থাকা না থাকাকে কেন্দ্র করে ২০১১ সাল থেকে থেকে সিরিয়ায় গৃহযুদ্ধ চলছে একইসঙ্গে বিভিন্ন দেশ তাদের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট কারণে সিরিয়ার যুদ্ধে জড়িয়ে পড়েছে।ফলে দেশটির গৃহযুদ্ধে তিন লক্ষাধিক মানুষ প্রাণ হারিয়েছে, লাখ লাখ মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে, চিরতরে পঙ্গুত্ব বরণ করেছে। অপরদিকে নর্থ কোরিয়ায় গণতন্ত্র নেই এবং দেশটি প্রেসিডেন্ট কিম জং উনের নিষ্ঠুর শাসনাধীনে। কিন্তু বাংলাদেশ সারাবিশ্বে একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র হিসেবে পরিচিত থাকলেও শেখ হাসিনার ক্ষমতার লোভের কারণে দেশটি গণতান্ত্রিক চরিত্র হারিয়েছে।
রিপোর্টে বলা হয়, বাংলাদেশে জনগণের ভোট ছাড়াই নির্বাচনের নামে শেখ হাসিনা সরকার গঠন করেছে। নির্বাচনের আগেই ১৫৪ জনকে জনপ্রতিনিধি হিসেবে নির্বাচিত করা হয়েছে। দেশের নিম্ন আদালত – উচ্চ আদালত সব শেখ হাসিনার নিয়ন্ত্রণে। সকল সরকারি প্রতিষ্ঠান কৌশলে ধ্বংস করা হয়েছে বলে দেশটির অধিকাংশ জনগন এবং সিভিল সোসাইটির প্রিতিনিধিরা মনে করেন। দেশটিতে গণমাধ্যমের স্বাধীনতা নেই, সিভিল সোসাইটি শেখ হাসিনার রোষানলে। গুম-খুন-অপহরণ দেশটিতে এখন নৈমিত্তিক বিষয়ে পরিণত করা হয়েছে। দেশের সরকারি ও বেসরকারি ব্যাংকগুলো থেকে টাকা লুট করে বিদেশে পাচার করে দেয়া হয়েছে। দেশটির সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে অন্যায়ভাবে কারারুদ্ধ করে রাখা হয়েছে বলে দেশটির অধিকাংশ জনগণ মনে করে।
২০৩ পৃষ্ঠার রিপোর্টের বাংলাদেশ চ্যাপ্টারে আরো বলা হয়, মিয়ানমার থেকে নিপীড়ণের শিকার হয়ে বাংলাদেশে প্রায় সাতলাখ রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী বাংলাদেশে আশ্রয় নিলেও শেখ হাসিনা প্রকাশ্যে তার দেশের পার্লামেন্টে দাঁড়িয়ে মিয়ানমারের স্টেট কাউন্সিলর অং সান সুকি’র পক্ষে বক্তব্য দেয়ায় রোহিঙ্গা ইস্যুটি এখন জটিল আকার ধারণ করেছে। রিপোর্টে মন্তব্য করে বলা হয়, গণতন্ত্র ও নির্বাচনে নামে যেভাবে একটি রাষ্ট্রকে কলুষিত করা হচ্ছে তাতে ভবিষ্যতে বাংলাদেশকে যে কোনো যুদ্ধবিধ্বস্ত রাষ্ট্রের চেয়ে কঠিন পরিস্থিতি মোকাবেলা করতে হতে পারে।
“দিস রিপোর্ট ইস টোটালি রাবিশ, আই উইল ব্রিং ইট টু দা এটেনশন অব আওয়ার প্রাইম মিনিস্টার ভেরি সুন। দিস ইস এ প্রোপাগান্ডা অব আওয়ার পলিটিকাল রাইভালস”- এই ছিল সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিত এর দাম্ভিক এবং রাগান্বিত জবাব। তিনি এই প্রতিষ্ঠানের অস্তিত্ব নিয়েও প্রশ্ন তুলেন যা পুরোপুরি অবান্তর, বিস্ময়কর এবং একই সাথে হাস্যকর।