হটাত্ করে জামাতীদের মানবতা গজিয়ে উঠেছে তা গত কয়েকদিন ধরে ব্লগ গুলোতে বেশ ভাল করে বুঝা যাচ্ছে। কিন্তু এই ধরনের মানবতা বহু প্রশ্নের সৃষ্টি করে বলে আমি বিশ্বাস করি। যেমন
১. ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময়কার চিত্র উল্লেখযোগ্য বলে বিবেচিত। ওই সময়ের যে মানবতা জামাতিরা দেখিয়েছিল তা আজও বাংলার দেশ প্রেমিক জনগণ ভুলতে পারেনি। ত্রিশ লক্ষ মুক্তি বাহিনীর রক্তে গন্ধ এখনো যাদের হাতে লেগে রয়েছে দুই লক্ষ মা বোনের ইজ্জতের কালিমা এখনো যাদের শরীরে রয়েছে তাদের এই মানবতা বহু প্রশ্নের জন্ম দেয়। আসলে কী তারা মানবতা দেখাচ্ছে নাকি আনতজাতিক ষড়যন্ত্রের সাথে হাত মিলিয়ে শেখ হাসিনার সরকার কে বিপগ্রস্থ করার অপপ্রয়াস চালাচ্ছে তা ভাবতে হবে।
২. রোহিঙ্গারা যখন এই দেশে স্থায়ী ভাবে আসবে তখন কাদের বেশি লাভ হবে ? কারণ রোহিঙ্গারা জামাতের পেয়িং গেস্ট হিসেবে কাজ করে। রোহিঙ্গাদের দিয়ে জামাতিরা বেশ লাভবান হয় তা অতীত ইতিহাস ঘাতলে খুব সহজে বের হয়ে যাবে।
৩. জামাতীদের বিশাল একটা আর্থিক সুবিধা হলো মাদক ব্যবসা। যা জামাতিরা রোহিঙ্গা দের দিয়ে অতি সু দক্ষ ভাবে পরিচালনা করিয়ে থাকে। উল্লেখ্য এই দেশে ইয়াবা ব্যবসার জনক হিসেবে রোহিঙ্গাদের ধরা হয়। যারা মিয়ানমার থেকে ইয়াবা এনে এই দেশের যুব সমাজের হাতে পৌছে দিচ্ছে জামাতীদের পরক্ষ্য সহযোগিতায়।
৪. জামাতিরা অস্র ব্যবসার সাথে জড়িত যা সু কৌশলে রোহিঙ্গাদের দিয়ে করিয়ে থাকে। উল্লেখ্য গত বেশ কয়েক বছরের সারণী ধরলে দেখা যাবে দেশের অধিকাংশ অস্রের চালান কক্সবাজার সীমান্ত অঞ্চল দিয়ে হয়েছে। যার সাথে রোহিঙ্গারা জড়িত ছিল বলে অসংখ্য প্রমাণ রয়েছে।
৫. দেশে জঙ্গিবাদের সূচনা হয়েছে এই রোহিঙ্গাদের দিয়ে যারা মদদ দাতা হিসেবে জামাতিরা জড়িত বলে প্রমাণ রয়েছে।
জামাতি দের সাথে কিছু তথাকথিত প্রগতিশীল দের কে বলতে চাই, রোহিঙ্গাদের প্রতি মানবতা প্রকাশ করার আগে নিকট কিছু ইতিহাস পর্যালোচনা করে তারপর না হয় রোহিঙ্গাদের প্রতি মানবতা প্রকাশ করুন।
বিপুল পরিমাণ ইয়াবাসহ গত জানুয়ারি মাসে কক্সবাজারের কুতুপালং শরণার্থী শিবিরের কাছে ধরা পড়েছিলেন মিয়ানমার থেকে আসা দুই নারী। তাঁদের গন্তব্য ছিল কক্সবাজার শহর। গত মার্চ মাসে কুতুপালং শিবিরের ভেতরে শরণার্থী হিসেবে নিবন্ধিত এক নারী ধরা পড়েন আধা কেজি গাঁজা ও দুই লাখ সাত হাজার টাকা নিয়ে। এভাবে প্রায় প্রতিদিনই ইয়াবা, গাঁজা, হেরোইনসহ নানা ধরনের মাদক নিয়ে ধরা পড়ছে মিয়ানমার থেকে আগতরা। তারা রোহিঙ্গা নামে পরিচিত।ওই রোহিঙ্গারাই এখন বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তে মাদক চোরাচালানের সঙ্গে জড়িত। শুধু তা-ই নয়, বাংলাদেশ সরকারের উদারতার সুযোগে এ দেশে আশ্রয় নিয়ে তাদের বসতিগুলোকেও ইয়াবাসহ নানা রকম মাদকের আখড়া বানিয়েছে তারা। এ দেশে শরণার্থী শিবির ও এর আশপাশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের আয়ের অন্যতম উত্স হলো মাদক। আরও রয়েছে দেশি-বিদেশি অবৈধ অস্ত্র ব্যবসার সঙ্গেও রোহিঙ্গারা জড়িত।
রোহিঙ্গারা টাকা দিলেই তারা ইয়াবা দেবে। এগুলো আসে মূলত মিয়ানমার থেকে। উখিয়া থেকে টেকনাফ পর্যন্ত যে পরিমাণ অত্যাধুনিক মোটরসাইকেল চোখে পড়বে, তার অর্ধেকও দেখা যায় না কক্সবাজার শহরে। মোটরসাইকেল আরোহী যুবকদের অনেকেই মাদক ব্যবসার সঙ্গে জড়িত। তাদের আনাগোনা মিয়ানমার সীমান্ত, রোহিঙ্গাদের বসতি আর বাস টার্মিনাল ঘিরে। পরে বাস-মিনিবাস, ট্রলারে নানা বেশের যাত্রীর মাধ্যমে ইয়াবাসহ নানা ধরনের মাদক ছড়িয়ে পড়ছে সারা দেশে।
বাংলাদেশে ইয়াবা কিভাবে ঢুকছে জানেন ? বাংলাদেশের কাছাকাছি মিয়ানমারের মংডু শহরে কয়েকটি কারখানার রয়েছে। ওই কারখানাগুলোতে উত্পাদিত ইয়াবা খুবই নিম্নমানের। এ ছাড়া অনেক সময় রোহিঙ্গারা জ্বর বা অসুস্থতা নিয়ে কাঁপতে কাঁপতে বয়স্ক ব্যক্তিরা মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশে ঢুকে পড়েন। এরপর কর্তৃপক্ষ তাঁদের আটকালে তাঁরা পায়ে ধরে অসুস্থতার কথা জানান। খালি হাতে আসেন না কিন্তু কেউ চিকিত্সা খরচ মেটাতে অনেক সময়ই তাঁরা সঙ্গে নিয়ে আসেন ইয়াবা, যা বিক্রি করে বা ঘাটে ঘাটে দিয়ে বাংলাদেশের বেশ ভেতরে পৌঁছান। ইয়াবা ও অন্যান্য মাদকসহ মিয়ানমার থেকে আগতরা ধরা পড়লেও বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই তারা পার পেয়ে যায়। কারণ একবার তাদের কারাগারে পাঠানোর অর্থ হলো- তাদের দায়দায়িত্ব অনেকটা এ দেশেরই কাঁধে চলে আসা। কেননা মিয়ানমার তাদের নাগরিক বলে স্বীকার না করায় ফেরত পাঠানোর প্রক্রিয়াটিও অনেক জটিল।
কক্সবাজার ও টেকনাফে রোহিঙ্গা বসতিগুলোর আড়ালে মাদকের পাশাপাশি মাথাচাড়া দিয়ে উঠছে নারী-শিশুসহ মানব পাচার, মৌলবাদী ও জঙ্গি তত্পরতা , যৌন ব্যবসা, চুরি, ডাকাতি, চাঁদাবাজি, ছিনতাইয়ের মতো গুরুতর সব অপরাধ। এসব এলাকা নিয়ন্ত্রণ করছেন রোহিঙ্গা নেতা বা সরদাররা। তাঁরা পরিচিত ‘মাঝি’ নামে। তাঁদের অনেকেই মিয়ানমারে বিচ্ছিন্নতাবাদী আন্দোলনের সঙ্গে সক্রিয়ভাবে জড়িত রয়েছে।
শুধু তাই নয় বাংলাদেশে জঙ্গি উত্পাদনের সাথে রয়েছে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের বিশাল ভূমিকা।প্রশিক্ষিত রোহিঙ্গা বিচ্ছিন্নতাবাদীরা নামে-বেনামে বাংলাদেশে অবস্থান করছে। তারা বিগত বছরগুলোর সময়েও বাংলাদেশে জঙ্গিদের প্রশিক্ষণে ভূমিকা রেখেছে। ১৯৮৬ সালে প্রথম রোহিঙ্গা বিচ্ছিন্নতাবাদী ডা. ইউনুস ও নুরুল ইসলাম গড়ে তোলেন ‘রোহিঙ্গা সলিডারিটি অরগানাইজেশন’ বা ‘আরএসও’। বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তের দুর্গম পাহাড়ি অরণ্যে সে সময় সংস্থাটি একাধিক সামরিক প্রশিক্ষণ কেন্দ্র পরিচালনা কোর্ট। নব্বইয়ের দশকের শুরুতে আরএসও ভেঙে সেলিম উল্লাহর নেতৃত্বে গড়ে ওঠে ‘আরকান আর্মি’ নামে নতুন গেরিলা সংগঠন। কিছুদিন যেতে না যেতেই ফের ভাঙনের কবলে পড়ে উভয় সংগঠন। সৃষ্টি হয় ‘আরকান রোহিঙ্গা ন্যাশনাল অরগানাইজেশন’ বা ‘এআরএনও।
সীমান্তবর্তী অরণ্যগুলোতে তত্পরতা চালাতে থাকে থাইল্যান্ড সীমান্তভিত্তিক কারেন গেরিলার অংশ ‘ন্যাশনাল ইউনাইটেড পার্টি অব আরকান’ বা ‘নোপা’। এর নেতৃত্ব দেয় ২০০৪ সালে বঙ্গোপসাগরে ১৪ মাঝিমাল্লা হত্যার প্রধান আসামি নাজমুল আলম চৌধুরী। ওই সময় সৃষ্টি হয় ডা. নুরুল ইসলাম ও জহিরের নেতৃত্বে ‘আরকান রোহিঙ্গা ইন্টেলিজেন্স ফোর্স’ বা ‘আরিফ’, ‘ইক্তেদাতুলা আল মুসলেমিন’ বা ‘আইটিএম’, ‘ইউনাইটেড স্টুডেন্ট অ্যাসোসিয়েশন অব আরকান মুভমেন্ট’ বা ‘ইউএসএএন’সহ বেশ কয়েকটি বিচ্ছিন্নতাবাদী গ্রুপ। এই বিচ্ছিন্নতাবাদী রোহিঙ্গা গ্রুপগুলোর প্রকাশ্য তত্পরতা চলে ১৯৯৫ সাল পর্যন্ত। ২০০৪ সালের ১ অক্টোবর নাইক্ষ্যংছড়ির তত্কালীন বিডিআরের ফাঁদে ভারী অস্ত্রসহ ধরা পড়ে এআরএনও কমান্ডার আনোয়ার। মূলত সেই থেকে রোহিঙ্গা বিচ্ছিন্নতাবাদীরা পাহাড়ে তাদের গেরিলা ট্রেনিং ক্যাম্পগুলো গুটিয়ে নিতে শুরু করে। তাদের হাতে থাকা বিপুল পরিমাণ ভারী অস্ত্র, গোলা-বারুদ পাহাড়ে নিরাপদে মাটির নিচে লুকিয়ে রাখে।
আমাদের মানবতা কাদের জন্য দেখানো উচিত ? জানতে চাই তথাকথিত প্রগতিশীল দের কাছে। আর ধর্ম ব্যবসায়ী দালাল দের কাছে কিছু জানার নেই।
ধর্ম ব্যবসায়ী যাজক জামাতিরা যে ধর্মের দোহাই দিয়ে টালগল পাকাবে সেটা তো একজন বাঙালি হিসেবে আমি জানি। রোহিঙ্গারা যত বেশি করে বাংলাদেশে ডুকবে তত লাভ বেশি হবে জামাতীদের। আর তাই তারা তো ধর্মের দোহাই দিয়ে যাবেই। তাতে বিভ্রান্ত হতেই হবে এমন কোনও কথা নেই।
Nationalist View – analysing Bangladeshi politics.
Copyright © 2020 Nationalist View – All rights reserved.