বগুড়া গসরকারি আযিযুল হক কলেজের প্রায় সাড়ে ৬৮ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে সাবেক অধ্যক্ষ সুলতান আলীসহ ২৩ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন-দুদক। দুদকের বগুড়া কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক বীরকান্ত রায় আজ সোমবার সদর থানায় পৃথক তিনটি মামলা করেন।
মামলাগুলোতে ছাত্রলীগের তিন নেতা ও যুবলীগের এক নেতা এবং কলেজের ১৮ জন কর্মচারীকেও আসামি করা হয়েছে।
অধ্যক্ষ বাদে আসামিরা হলেন আযিযুল হক কলেজ শাখা ছাত্রলীগের আহ্বায়ক আবু জাফর মো. মাহমুদুন্নবী, যুগ্ম আহ্বায়ক কামরুল হুদা ও কামরুল হাসান, যুবলীগের বগুড়া জেলা শাখার সদস্য আমিনুল ইসলাম, কলেজের ভারপ্রাপ্ত প্রধান সহকারী মিজানুর রহমান, হিসাব সহকারী রফিকুল ইসলাম, সাবেক প্রধান সহকারী জসিম উদ্দিন, সাবেক হিসাব সহকারী আবদুল মান্নান, অফিস সহকারী আবুল হোসেনসহ ২২ জন।মামলার এজাহারে বলা হয়, অধ্যক্ষ সুলতান আলী ২০০৭ সালের ১৮ নভেম্বর আযিযুল হক কলেজে যোগ দেন। ২০০৯ সালের ৩১ ডিসেম্বর তিনি অবসর নেন। এই সময়ের মধ্যে তিনি কলেজের কর্মচারী ও চার ছাত্রনেতার সহযোগিতায় প্রায় সাড়ে ৬৮ লাখ টাকা আত্মসাৎ করেন।
সুলতান আলী দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে ২০০৮ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত সময়ে ১৫ জন কর্মচারীর সহযোগিতায় প্রায় সাড়ে ১৩ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে অধ্যক্ষসহ ১৬ জনের বিরুদ্ধে একটি মামলা করা হয়। ২০০৮ সালের ১ জুলাই থেকে ২০০৯ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত সময়ে বিভিন্ন খাতে প্রায় ৩৫ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে অধ্যক্ষ, তিন ছাত্রনেতা ও ১৪ জন কর্মচারীকে আসামি করে আরেকটি মামলা করা হয়। অপর মামলাটি করা হয় ২০০৯ সালের ১ জুলাই থেকে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত সময়ের মধ্যে ২০ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে। এ মামলায় চার ছাত্রনেতা ও কর্মচারীসহ ২২ জনকে আসামি করা হয়।
মামলায় বাদী উলে্লখ করেন, তাঁরা তদনেত দেখেছেন, কলেজের অধ্যক্ষ ও অন্যরা যোগসাজশ করে ভুয়া রসিদে দরিদ্র তহবিল থেকে অর্থ তুলে নিয়েছেন। ছাত্রসংসদ, মসজিদ নির্মাণ, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানসহ বিভিন্ন খাতে ছাত্রদের কাছ থেকে তোলা টাকাও ভুয়া রসিদ দিয়ে তুলে আত্মসাৎ করা হয়েছে।
যোগাযোগ করা হলে সাবেক অধ্যক্ষ সুলতান আলী বলেন, ‘এই মুহূর্তে ঢাকায় আছি। শুনেছি, আমার বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। কাগজপত্র হাতে না পাওয়া পর্যন্ত এ ব্যাপারে কোনো মন্তব্য করব না।’
যুবলীগের নেতা আমিনুল ইসলাম তাঁর বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, কলেজ ছাত্রলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক কামরুল হুদা সন্ত্রাসী হামলায় আহত হলে তাঁর চিকিৎসার জন্য অধ্যক্ষের কাছে আবেদন করে ৫০ হাজার টাকা নেওয়া হয়েছিল। সেই টাকায় কামরুল হুদার চিকিৎসা হয়েছে।
বগুড়া সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এ কে এম খালেকুজ্জামান মামলা হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।