বাংলাদেশের তিনবারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। মুসলিম বিশ্বের প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রীও তিনি। ব্যক্তিগতভাবে তার নির্বাচনী ইতিহাসে পরাজয়ের কোনো ঘটনা নেই। কিন্তু এখন তিনি মামলার জালে বন্দী। তার বিরুদ্ধে জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় জামিন বাতিলের আবেদন করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। বৃহস্পতিবার রাজধানীর বকশিবাজারের আলিয়া মাদরাসা মাঠে স্থাপিত ঢাকার ৫নং বিশেষ জজ ড. আখতারুজ্জামানের আদালতে মামলাটি খালেদা জিয়ার আত্মপক্ষ সমর্থনের দিন ধার্য ছিল। খালেদা জিয়া আদালতে হাজির না হওয়ায় দুদকের আইনজীবী মোশাররফ হোসেন কাজল তার জামিন বাতিলের আবেদন করেন। তবে আদালত এ ব্যাপারে কোনো আদেশ দেননি।
অনদিকে বেগম খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা আদালতকে জানিয়েছেন, খালেদা জিয়া চিকিৎসার জন্য বিদেশে গিয়েছেন। আদালতে তারা এই সংক্রান্ত মেডিকেল সার্টিফিকেট জমা দেন। আইনজীবীরা বলেন, আইননানুগভাবে তিনি বিদেশে গেছেন। এবং তার বিদেশ গমণের বিষয়টি আদালতকে অবহিতও করা হয়েছে। আইনজীবীরা আরো বলেন, এই অবস্থায় জামিন বাতিলের কোনো সুযোগ নেই। তবে আদালত এ বিষয়ে কোনো আদেশ দেননি। দুইপক্ষের বক্তব্যের শেষে আদালত জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট ও জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলার পরবর্তী শুনানির জন্য আগামী ২৪ জুলাই সোমবার দিন ধার্য করেন।
অপর দিকে খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলার তদন্ত কর্মকর্তা দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) উপপরিচালক হারুন আর রশীদকে আংশিক জেরা করেন। তার জেরা শেষ না হওয়ায় পরবর্তী জেরার জন্য নতুন দিন ধার্য করেন আদালত।
আদালতে খালেদা জিয়ার আইনজীবী হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, প্রবীণ আইনবিদ অ্যাডভোকেট খন্দকার মাহবুব হোসেন, সুপ্রিম কোর্ট বারের সভাপতি অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীন, অ্যাডভোকেট সানাউল্লাহ মিয়া, মাসুদ আহমেদ তালুকদার, জাকির হোসেন ভূইয়া প্রমুখ।
উল্লেখ্য, ২০০৮ সালের ৩ রা জুলাই জিয়া অরফানেজ ট্রাস্টের দুই কোটি ১০ লাখ ৭১ হাজার ৬৪৩ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া ও তার বড় ছেলে তারেক রহমানসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে রমনা থানায় মামলা করে দুদক। এ মামলায় খালেদা জিয়ার আত্মপক্ষ সমর্থন বিষয়ে শুনানির জন্য রয়েছে। রাজনৈতিক মহলের ধারনা এই আইনি জটিলতার মধ্যদিয়ে রাজনীতিতে চূড়ান্তভাবে কোনঠাসা হওয়ার পথে রয়েছেন তিনি।