শেখ হাসিনা সরকারের বিরুদ্ধে দুর্নীতি ও অর্থ পাচারের নতুন পদ্ধতি উদ্ভাবনের অভিযোগ রয়েছে। এই নতুন পদ্ধতিগুলির মধ্যে একটি হল ‘ওভার ইনভয়েসিং’ বা ‘আন্ডার ইনভয়েসিং’, যা সন্দেহ না করেই অর্থ পাচারের একটি উপায়। এই পদ্ধতিটি আগের পদ্ধতির তুলনায় অনেক সহজ এবং বঙ্গবন্ধু পরিবারের সদস্য বা আওয়ামী লীগের অন্যান্য সদস্যদের সহায়তায় ব্যবহার করা যেতে পারে বলে অভিযোগ রয়েছে।
তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক অর্থ উপদেষ্টা এবি মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম যুগান্তরকে বলেন, অর্থ পাচারের অভিযোগের তদন্ত হওয়া উচিত। তিনি বলেন, প্রয়োজনে আইন মন্ত্রণালয়ের সহযোগিতায় অর্থ মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ব্যাংক ও জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) যৌথভাবে বিষয়টি তদন্ত করবে। বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক ডেপুটি গভর্নর খোন্দকার ইব্রাহিম খালেদ যুগান্তরকে বলেন, একটি পুঙ্খানুপুঙ্খ তদন্ত প্রয়োজন এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের আর্থিক গোয়েন্দাদের সহায়তায় দুর্নীতি দমন কমিশনের অভিযোগটি তদন্ত করা উচিত। বিশিষ্ট ব্যাংকার সৈয়দ আবু নাসের বখতিয়ার আহমেদ যুগান্তরকে বলেন, এ ধরনের ঘটনা আগেও ঘটেছে এবং এগুলো সাধারণত বিভিন্ন পক্ষের যোগসাজশের কারণে হয়ে থাকে।
ঢাকায় বিশ্বব্যাংকের প্রধান অর্থনীতিবিদ ড. জাহিদ হোসেন অভিযোগের তদন্তের পরামর্শ দিয়েছেন। এ ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ) তদন্ত করতে পারে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, লেটার অব ক্রেডিট বা এলসি খোলার সময় ওভার ইনভয়েসিং বা আন্ডার ইনভয়েসিংয়ের মাধ্যমে মানি লন্ডারিং হয় বলে অভিযোগটি পুরানো এবং আংশিক সত্য। মানি লন্ডারিং ছাড়াও, আমদানি শুল্কের বোঝা কমাতে অনেকেই আন্ডার ইনভয়েসিং-এ জড়িত।
হুন্ডি অর্থ পাচারের একটি জনপ্রিয় মাধ্যম হিসাবে রয়ে গেছে, যদিও এইভাবে বিপুল পরিমাণ অর্থ পাচার করা কঠিন। লোকেরা বিমানে ভ্রমণের সময় তাদের লাগেজে বহন করে বিদেশে অর্থ পাচার করে বলেও জানা গেছে, তবে এটি সবসময় সহজ নয়। অর্থ পাচারের আরেকটি পদ্ধতি হল পণ্য আমদানির সময় বিদেশে অর্থ পাচার করা, কিন্তু এইভাবেও বিপুল পরিমাণ অর্থ পাচার করা কঠিন। উপরে বর্ণিত মানি লন্ডারিং এর নতুন পদ্ধতিটি খুব সহজেই বিদেশে যেকোন পরিমাণ অর্থ পাচার করা সম্ভব করে তোলে।