নিজস্ব প্রতিবেদক: বিএনপির যুগ্ম-মহাসচিব অ্যাডভোকেট সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল বলেছেন, ‘বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে যে অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে তাতে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে এসে দাঁড়িয়েছে।
গতকাল জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে যেসব ঘটনা ঘটেছে তারপরেও ভিসি ছাত্রলীগের প্রশংসা করে বলে ‘ছাত্রলীগ গণঅভ্যুত্থান করে আমাকে বাঁচিয়েছে’। এর মতো নির্লজ্জ ভিসি আর কোথাও আছে কিনা জানা নেই। ছেড়া জুতার নিচে যে সুখতালি থাকে সেটা দিয়ে এদেরকে পিটাইতে লজ্জা করে আমার।’
বুধবার (৬ নভেম্বর) জাতীয় প্রেসক্লাবে আব্দুস সালাম হলে ঢাকাস্থ হোমনা উপজেলা জাতীয়তাবাদী ফোরাম আয়োজিত এক স্মরণ সভা ও মিলাদ মাহফিলে তিনি এসব কথা বলেন। বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য এম কে আনোয়ারের ২য় মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিস্থিতি প্রধানমন্ত্রীর পর্যবেক্ষণে আছে- আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের এমন বক্তব্যের প্রেক্ষিতে আলাল বলেন, ‘হাসপাতালে লেখা আছে নিবিড় পর্যবেক্ষণ কেন্দ্র আর ইংরেজিতে বলা হয় আইসিইউ, যেখানে মানুষ প্রায়ই মৃত্যুপথযাত্রী, সেখানে তাকে (রুগিকে) নিবিড় পর্যবেক্ষণে রাখা হয় এমনকি আত্মীয়-স্বজনদের কেউ দেখা করতে দেয়া হয় না। এখন ওবায়দুল কাদের যেটা বললেন প্রধানমন্ত্রীর পর্যবেক্ষণে আছে তাহলে কি জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় আইসিইউতে চলে গেছে? এইজন্য কি বন্ধ করে দেয়া হলো?’
‘ছাত্র-ছাত্রীদের জীবন ধ্বংস করে, পরবর্তী প্রজন্মের জীবন ধ্বংস করে, বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ করে দেয়া হবে তাতে কোনো সমস্যা নাই। কিন্তু নিজের ভ্যানিটি ব্যাগের কাছের লোককে ভিসি বানাতে হবে?’
আলাল বলেন, ‘গোপালগঞ্জে শেখ মুজিবরের বাড়ি সেখানকার বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি নিয়ে আন্দোলন। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি নিয়ে আন্দোলন ।ইসলামিয়া বিশ্ববিদ্যালয় আন্দোলন। গোটা সমাজকে ধ্বংস করে ফেলছে।’
যুবদলের সাবেক এই সভাপতি বলেন, ‘দুর্নীতি-ক্যাসিনো এ গুলো তো সামান্য ব্যাপার, হাজার হাজার কোটি টাকার ভাগ-বাটোয়ারা নিয়ে পারিবারিক যে যন্ত্রনা সেই যন্ত্রণার কারণে মানুষের সামনে শুধু একটু তারা বাতি জ্বালিয়ে দেখানো হচ্ছে যে, ‘একে ধরেছি ওকে ধরেছি তাকে ধরেছি’। তা আবার মুহূর্তের মধ্যে নিভে যায়, তা নাহলে যে যুবলীগ প্রেসিডেন্টের বিরুদ্ধে এত কথা তাকে এখন ধরনের না কেন? ভগ্নিপতি জামাইয়ের আদরে এখনো রেখেছে তাকে।’
আলাল বলেন, ‘বাংলাদেশের যে রাস্তাগুলো হয়েছে সবগুলো বিএনপির আমলে ২০০১ থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত হয়েছে। এবং সে রাস্তাগুলো হয়েছিল বলেই আজকে পরিবহনের এত ভিড়, জনগণ নিরাপদ যাতায়াত করতে পারছে। কিন্তু বর্তমানে রাস্তার কোন নিরাপত্তা নাই। নিরাপদ রাস্তার জন্য জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের মানববন্ধন পর্যন্ত করতে হয়। আমরা রাস্তা নিরাপদ চাই। মানুষের অধিকার চাই। জনগণ নিরাপদে বাঁচার অধিকার চায়। বেগম খালেদা জিয়ার নিঃশর্ত মুক্তি চাই। তারেক রহমানের বিরুদ্ধে সকল ষড়যন্ত্রের জাল ভেঙে নিরাপদে বাংলাদেশে আনতে চাই।’
তিনি বলেন, ‘ক্যাসিনো অভিযানে গ্রেফতারকৃতরা যে এমপি-মন্ত্রী প্রকৌশলীদের নাম বলেছে তাদেরকে গ্রেফতার করছে না কেন? এ কথাগুলো বলতে গেলেই যন্ত্রণা নেমে আসে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের প্রত্যেক নেতাকর্মীদেরকে এক-একটা গণমাধ্যম হতে হবে। দৈনিক পত্রিকা হতে হবে। দেশের যেখানে যেসব দুর্নীতি হচ্ছে অন্যায় হচ্ছে অবিচার হচ্ছে তা সামাজিক মাধ্যমে তুলে ধরতে হবে।’
আয়োজক সংগঠনের সভাপতি মো. দেলোয়ার হোসেনের সভাপতিত্বে স্মরণ সভায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশারফ হোসেন, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, বেগম সেলিমা রহমান, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু প্রমুখ বক্তব্যে রাখেন।