শিরোনাম শুনেই হয়তো বুঝতে পারছেন আমি কি বলতে চাচ্ছি। হয়তো অনেকে অবাকও হচ্ছেন আমার কথা শুনে। আমি মোটেও কোন ধরনের মজা করার জন্য এই কথা বলছি না। কথা একদম প্রমাণিত সত্য।
আপনারা জানেন এই অবৈধ আওয়ামী সরকার এর শাসন ব্যবস্থায় কতশত লোক টাকা পয়সা ও ক্ষমতার প্রভাব খাটিয়ে মিথ্যা মুক্তিযোদ্ধা সনদ বের করে নিয়েছে। তার মধ্যে রয়েছে রাজাকাররাও। এই অবৈধ ভাবে ক্ষমতায় জেঁকে বসার মতই এই ঘৃণ্য কার্যক্রম। সাম্প্রতিক খবরের পত্রিকাগুলোতে চোখ বুলালেই দেখতে পাবেন কত আওয়ামী নেতারা নিজের প্রভাব খাটিয়ে মুক্তিযোদ্ধা গ্যাজেট এ নাম লিখিয়ে নিয়েছে, এবং নিয়ে নিয়েছে মুক্তিযোদ্ধা সনদ।
মুক্তিযুদ্ধ’র মত এই পবিত্র বিষয়টি আসলেই একটা ব্যবসার পর্যায়ে নিয়ে গিয়েছে আওয়ামীলীগ। কেউ আওয়ামীলীগের পক্ষে কথা বললে হয়ে যায় মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের লোক। আর কেউ যদি ভুলক্রমেও আওয়ামীলীগের বিপক্ষে শব্দ উচ্চারণ করে ফেলেছে তো হয়েছে, সাথে সাথে তার নামের সাথে যুক্ত হয়ে যাবে ‘রাজাকার’-এর ট্যাগ। এবং এমন বিশ্বাস্যযোগ্য ভাবে তারা এই ট্যাগ দিবে যে সাধারণ মানুষ তাতে বিভ্রান্ত হয়ে যায় এবং এসব মিথ্যাচারএ বিশ্বাস করে ফেলে। কি ভয়ানক তাই না? ভয়ানক বলার কারন হলো, এই ধরনের মিথ্যাচার এ যখন সাধারণ মানুষ বিশ্বাস করে ফেলে, তখন সমস্যা শুরু হয়। নানা ধরনের সামাজিক চাপের মধ্যে থাকেন সদ্য ট্যাগ খাওয়া লোকগুলি।
কিন্তু যখন আওয়ামীপন্থি কারো নামে এই ধরনের তথ্য বা রাজাকার হওয়ার অভিযোগ আসে, তখন তারা একদম চুপ করেই থাকেন। টু শব্দ টুকুও করেন না। একদম চেপে যান বিষয়টি।
এর একটি জলজ্যান্ত উদাহরণ আপনাদেরকে দেই, তাহলে হয়তো আপনারা বুঝতে পারবেন যে আমি শুধু শুধু তাদের ওপর দোষারোপ করছি না। পর্যাপ্ত উপাত্ত আছে আমার কাছে। গতবছর আমার দেশ নামের একটি খবরের কাগজে সংবাদ এসেছিলো বিখ্যাত গণজাগরণ মঞ্চের কথিত মুখপাত্র ইমরান এইচ সরকার-কে নিয়ে। সেই পত্রিকা পর্যাপ্ত তথ্য প্রকাশ করে দাবি করেছে ইমরান এইচ সরকারের দাদা নাকি ছিলেন রাজাকার।
এবং আমরা সবাই জানি, ইমরান এইচ সরকার মূলত গণজাগরণ মঞ্চের হোলেও সে আসলে একজন আওয়ামীলীগ এর পেয়াদা মাত্র। আওয়ামীলীগ এর কথায় উঠে এবং বসে। আওয়ামীলীগের প্ল্যান মোতাবেকই তার সকল কাজ কর্ম গুলো করে থাকে।
এবং সব চেয়ে মজার বিষয় হলো, যখন আওয়ামীলীগকে ইমরান এর দাদা রাজাকার ছিল, এই বিষয়ে প্রশ্ন করা হলো, তখন তাদের সোজাসাপ্টা উত্তরঃ “দাদা রাজাকার হলে নাতিকে কেন সেতার দায়ভার নিতে হবে?”
নিঃসন্দেহে খুবই যৌক্তিক একটা কথা। কিন্তু তারা নিজেরাই নিজেদের কথা কন্ট্রাডিক্ট করে। কারন কোন মুক্তিযোদ্ধা যদি কোন কারনে আওয়ামীলীগ এর বিরুদ্ধাচরণ করেন, তখন বলা হয় “একবারের রাজাকার চিরকাল রাজাকার, কিন্তু একবারের মুক্তিযোদ্ধা চিরকাল মুক্তিযোদ্ধা নয়।” ঠিক একই ভাবে, কোন সাধারণ ব্যক্তি যদি আওয়ামীলীগ এর বিরুদ্ধে কথা বলে এবং ভুলক্রমে যদি তার অগ্রজ রাজাকার কিংবা যুদ্ধাপরাধের সাথে জড়িত থেকে থাকবে কিংবা সন্দেহও থাকে, তখন আওয়ামীলীগ এর পক্ষ থেকে বলা হয়, “রাজাকারের বংশধর রাজাকারই হয়, যেমন সাপের বাচ্চা সাপ হয়।”
দেখলেন তো, কিভাবে তারা মুক্তিযোদ্ধাদের একেবারে Disown করে দেয়? এর সব চেয়ে বড় কারন হলো, ব্যবসা। আমি আগেও বলেছি, আওয়ামীলীগ মুক্তিযুদ্ধকে আসলে একটি ব্যবসার পর্যায়ে নিয়ে গেছে। তবে আওয়ামীলীগ এর এইসব ধান্ধাবাজি আমাদের শক্ত হাতে প্রতিরুদ্ধ করতে হবে। নাহলে সত্যি একদিন আমাদের স্বপ্নের এই বাংলাদেশ রসাতলে যাবে।