করোনা ভাইরাস (কভিড-১৯) সন্দেহে গত ২৪ ঘণ্টায় ঢাকায় দু’টি হাসপাতালে ৬ জন রোগী ভর্তি হয়েছেন। এর মধ্যে কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে ৩ জন এবং বাংলাদেশ-কুয়েত মৈত্রী হাসপাতালে ৩ জন রোগী ভর্তি হয়েছেন বলে সূত্র জানিয়েছে।
তিন দিন আগে একজন চীনা নাগরিকও করোনা সন্দেহে কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। এই বিষয়ে কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল জামিল আহমেদ-এর সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি কথা বলতে রাজি হননি।
২৪ ঘণ্টায় করোনা সন্দেহে ৬ জন হাসপাতালে ভর্তি প্রসঙ্গে সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউট (আইইডিসিআর)-এর পরিচালকের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি মানবজমিনকে বলেন, প্রতিদিনই তো রোগী ভর্তি হয়। নমুনা পরীক্ষার পর করোনা না পেলে তারা চলে যান।
চীনা নাগরিকের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, হয়ত তিনি নমুনা পরীক্ষা শেষে চলে গেছেন। তিন দিন আগে করোনা সন্দেহে কুয়েত মৈত্রী হাসপাতালে ইরান ফেরত একজন পিএইচডি হোল্ডার ভর্তি হয়েছেন বলে বিমান বন্দর সূত্র জানিয়েছে।
তবে ভর্তি রোগী সম্পর্কে আইইডিসিআর থেকে কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।
এদিকে, গতকাল করোনা ভাইরাসের নিয়ে নিয়মিত ব্রিফিংয়ে আইইডিসিআর’র পরিচালক ডা. মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা বলেন, করোনা ভাইরাসের সঙ্গে তাপমাত্রার কোনো সম্পর্ক নেই। জীবনাচরণ পরিবর্তনের পরামর্শ দিয়ে তিনি বলেন, করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা বাড়ায় বিশ্ব পরিস্থিতির অবনতি হচ্ছে। তাপমাত্রার সঙ্গে করোনা ভাইরাসের কোনো সম্পর্ক নেই। উচ্চ তাপমাত্রা আছে এমন দেশেরও করোনা ভাইরাস আক্রান্ত হচ্ছে। করোনা ভাইরাস ৭০ ডিগ্রি তাপমাত্রায় টিকতে পারে না। কোনো দেশেই এতো তাপমাত্রা নেই। গ্রীষ্মকালের তাপমাত্রায় করোনা ভাইরাস আক্রান্তের সংখ্যা কমে যাবে এ ভরসায় বসে থাকা যাবে না। সবাইকে সচেতন হতে হবে। তিনি কোলাকুলি, হ্যান্ডশেক পরিহার করতে অনুরোধ করেন। ডা. ফ্লোরা আরো জানান, সিঙ্গাপুরে আক্রান্ত বাংলাদেশির মধ্যে ২ জন সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন। বাকি ৩ জনের অবস্থা অপরিবর্তিত।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সর্বশেষ রিপোর্ট অনুযায়ী বিশ্বে আক্রান্ত দেশগুলোতে এখন পর্যন্ত ৮৭ হাজার ১৩৭ জন করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত রোগী শনাক্ত করা হয়েছে। এদের মধ্যে নতুন রোগী আছেন ১ হাজার ৭৩৯ জন। এ রোগে এখন পর্যন্ত মৃতের সংখ্যা ৩ হাজার ছাড়িয়েছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার রিপোর্টের বরাত দিয়ে ডা. ফ্লোরা বলেন, চীনে এখন পর্যন্ত করোনায় আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ৭৯ হাজার ১৬৯ জন। চীনে ২ হাজার ৮৭৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর বাইরে অন্যান্য দেশে আক্রান্ত হয়েছেন ৭ হাজার ১১৬ জন।
করোনা ইস্যুতে বাংলাদেশের অবস্থান তুলে ধরে ফ্লোরা বলেন, বিশ্বের বিভিন্ন দেশে করোনা ভাইরাস ছড়িয়ে পড়েছে। আমরা সবসময় সতর্ক রয়েছি। দেশের বাইরে থেকে আসা সব নাগরিককে এয়ারপোর্ট ও বন্দরে স্ক্রিনিং করা হচ্ছে। কাউকে সন্দেহ হলে পরবর্তী ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। সব কর্মী একই নির্দেশে কাজ করছেন। এখন পর্যন্ত ৯৬ জনের নমুনা পরীক্ষা করে কারো শরীরে করোনা ভাইরাস পাওয়া যায়নি। বিমান, নৌ ও স্থল বন্দর এবং একটি ট্রেনে মোট ৪ লাখ ১৪ হাজার ৮২১ জনের স্ক্রিনিং করানো হয়েছে। সূত্র- মানব জমিন